নিঃসন্দেহে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুতেই মোমিনুল জানান দিয়েছিলেন তার প্রতিভার ঝলক। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আরো পরিণত হয়েছেন মোমিনুল। ১১টি সেঞ্চুরিই মোমিনুলের সে সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়। কিন্তু কাঁধে অধিনায়কত্বের ভার আসার পর থেকেই যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। নেতৃত্বের চাপ সামলাতে গিয়ে নিজের সহজাত ব্যাটিংটাই হারিয়ে ফেলেছেন। নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার পরও সেই সহজাত ব্যাটিং ফিরে আসতে পারছেনা। সবশেষ ৬ টেস্টের ১১ ইনিংসে মোমিনুলের ব্যাট থেকে দুই অংকের ঘরে যেতে পারা ইনিংস এসেছে মাত্র একটি। বাকি ১০টির চারটিতে রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
অধিনায়কত্ব ছেড়ে অ্যান্টিগা টেস্টে নিজেকে ফিরে পাওয়ার আশা করেছিলেন মোমিনুল। কিন্তু সেখানেও হলোনা রানে ফেরা। প্রথম ইনিংসে উইকেটে ছিলেন ১৫ মিনিট। বল খেলেছেন ৬টি। রানের খাতা খুলতে পারেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৮ মিনিট উইকেটে ছিলেন। ১২ বল মোকাবেলায় করেছেন ৪ রান। পরে কাইল মায়ার্সের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে এলেন। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটারের এই বাজে পারফরম্যান্সের প্রভাব পড়ছে পুরো দলের ওপর। যে অবস্থায় দল তার ওপর আস্থা রাখার কথা, সে অবস্থায় মুমিনুল উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসছেন। দলের বিপর্যয় রোধ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে মোমিনুলকে নিয়ে কি চিন্তা-ভাবনা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট ? তাকে কি দল থেকে বাদ দেয়া হবে নাকি কিছুদিনের জন্য বিশ্রামে পাঠানো হবে ।
অ্যান্টিগা টেস্টের পর সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কাছে মোমিুনলের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সরাসরি কোন মন্তব্য করতে চাইলেন না। তবে সাকিব বললেন মোমিনুল বিরতি চাইলে সেটি হতে পারে। যদিও সাকিব চান এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সময় নিতে। তিনি বলেন এটা আমার পক্ষে বলা মুশকিল। এখন মোমিনুল যদি মনে করে ওর বিশ্রাম দরকার আছে তাহলে সেটা হতে পারে। এখন আসলে একটা ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়াটা বা চিন্তা করাটা ভালো কিছু না। পরের দুইদিন আমাদের বিরতি আছে। এরপর যখন সেন্ট লুসিয়াতে অনুশীলন করব, ওই দিনই চিন্তা করব। আমাদের দলের জন্য কোনটা ভালো হতে পারে।
অবশ্য শুধু মোমিনুলই নন, বাংলাদেশের টপ অর্ডার সামপ্রতিক সময়ে অনেক খারাপ করছে। দ্রুত উইকেট চলে যাচ্ছে। একটা উইকেট পড়লে পরেরগুলোও প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয় কে আগে আউট হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের পর দেশের মাটিতে শ্রীলংকা সিরিজেও দেখা গেছে এ অবস্থা। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেও দেখা গেছে একই চিত্র। এ কারণে শুধু মোমিনুলকে নিয়ে চিন্তা করলে হবেনা। সাকিবের মতে এটুকু পরিবর্তন আনলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। খুব বেশি বদলালে যে খুব যে ভালো কিছু হবে তার গ্যারান্টি দেওয়া যাবেনা। তিনি বলেন শেষ ১৬ ইনিংসে ১০০ বা এর নিচে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়েছে ১৩ বার। সে জায়গা থেকে চিন্তা করলে ওখানে অনেক সমস্যা হচ্ছে। তবে এখনও আশাবাদী সাকিব। তিনি মনে করেন সবাই একসঙ্গে চেষ্টা করলে সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব। এরকম অবস্থায় আগেও পড়েছি আবার বের হয়েও এসেছি। আমার বিশ্বাস আছে আমরা ফিরে আসতে পারব।
