সাতকানিয়ায় মোবাইলে গেমস খেলাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক কাঠমিস্ত্রি নিহত হয়েছেন। তার নাম আবদুল গনি রকি (২৫)। গতকাল শুক্রবার সকালে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সদর ইউনিয়নের বারোদোনা এলাকায় ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি।
নিহত রকি চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গোদার পাড়ার মৃত আহমদ কবিরের ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল শুক্রবার দুপুরে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
সাতকানিয়া সদর ইউপির সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, রকি বারোদোনা দোভাষী পাড়া এলাকায় মনজুর আলমের ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতো। ওইদিন রাত দেড়টার দিকে বসুমতি দীঘির পশ্চিম পাশে নির্মিতব্য রেল লাইনের উপর তাকে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করে।
এ সময় ওই এলাকায় থাকা কয়েকজন লোক তার চিৎকার শুনে সেখানে গেলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সাতকানিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা।
সাতকানিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. উচ্ছ্বাস কারন অভি বলেন, রকির শরীরের পেছনে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়া ছাড়াও শরীরের কিছু অর্গান ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার। আমরা রক্তক্ষরণ বন্ধ করে তাকে চমেক হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউপি সদস্য বলেন, রকি ও এলাকার আরো কয়েকজন যুবক মিলে রেল লাইন সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে নির্জন জায়গায় মোবাইলে গেমস খেলতো। ওই রাতেও তারা সেখানে গেমস খেলছিল। মনে হচ্ছে, গেমস খেলার সময় তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
রকি যে দোকানে কাজ করতেন তার মালিক মনজুর আলম বলেন, সে আমার দোকানে রমজানের আগে কিছুদিন কাজ করেছিল। ওই সময় যাবতীয় পাওনা বুঝে নিয়ে চলে যায়। গত ৯ জুন আবার আসে। দৈনিক ৫৫০ টাকায় কাজ করে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ১১শ টাকা নেয় রকি। পরে রাত ২টার দিকে জানতে পারি রেল লাইন এলাকায় তাকে কে বা কারা ছুরিকাঘাত করেছে।
নিহতের বড় ভাই মো. আবদুল নবী বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রকি আমাকে ফোন করেছিল। ওই সময় আমার সাথে অনেকক্ষণ কথা হয়। মাকেও ফোন করেছিল। বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু বাড়িতে যায়নি। সকালে জানতে পারলাম ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে আমার ভাই মারা গেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।
সাতকানিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, মোবাইলে গেমস খেলাকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা দুজনকে আটক করেছি। একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।