দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর মন্ত্রিসভায় প্রথম বড় ধরনের রদবদল আনলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ৪৩ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন মুখ রয়েছেন ৩৬ জন। এদের কেউ নতুন মন্ত্রী হচ্ছেন। আবার কেউ প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন। পূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী মিলিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য হচ্ছেন ৭৭ জন। বড় এ রদবদলের আগে গতকাল বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্কসহ মন্ত্রিসভার ১২ সদস্য পদত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। উত্তর প্রদেশসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যগুলোতে নির্বাচনের আগে করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবেলা এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সমালোচনার মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদলের এ পদক্ষেপ এল। খবর বিডিনিউজের।
বুধবার যারা শপথ নিয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন, গতবছর দলবদল করে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া সাবেক বিরোধীদলীয় এমপি জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, আসামের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়াল এবং সাবেক সংগ্রেস পার্টি নেতা নারায়ন রানে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছিল, এবারের মন্ত্রিসভার রদবদল এমনভাবে করা হবে যাতে ভারতের সব অংশের, সব সমপ্রদায়ের তাতে প্রতিনিধিত্ব থাকে। সে নীতিরই প্রতিফলন ঘটিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আগের দুইজনের জায়গায় চারজনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অমিত শাহের ডেপুটি হয়েছেন তিনি। এরপর আছেন, বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী হলেন তিনি। আরেকজন হচ্ছেন, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর; যিনি হয়েছেন বন্দর, জাহাজ পরিবহন ও জল পরিবহন মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী। আর চতুর্থজন হচ্ছেন, আলিপুরদুয়ারে সাংসদ জন বার্লা। তিনি হয়েছেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রীদের হাতে ক্ষমতা খুব বেশি না থাকলেও গত সাত বছরের মধ্যে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ থেকে চারজন মন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেলেন। তবে আগে যে দুই জন মন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছিলেন সেই বাবুল সুপ্রিয় ও দেবশ্রী চৌধুরী ইস্তফা দিয়েছেন। কাজের মূল্যায়ন এবং রাজনীতির সমীকরণ মিলিয়ে মন্ত্রিসভায় এই রদবদল করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
বিবিসি জানায়, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তর প্রদেশের কথা মাথায় রেখে মন্ত্রিসভায় নেওয়া হয়েছে অন্তত ছয় মন্ত্রীকে। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) আগামী বছরে উত্তর প্রদেশে ফের দখল ফিরে পেতে চায়। কারণ, সেখানে পরাজয় হলে তা হবে মোদীর জন্য বিব্রতকর। তাছাড়া, নতুন মন্ত্রিসভায় আগের চেয়ে বেশি নারী সদস্যও রাখা হচ্ছে। আগের মন্ত্রিসভায় ছিল মাত্র ৪ নারী মন্ত্রী। কিন্তু এবারের মন্ত্রিসভায় সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১। এর মধ্যে ৭ জনই নতুন।












