লামার ফাইতং ইউনিয়নের অলিকাটার ঝিরি এলাকায় মোটরসাইকেল চালক মমিনুল ইসলাম (১৬) হত্যার ঘটনায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত মঙ্গলবার রাতে নগরীর বাকলিয়া এলাকায় র্যাব-১৫ অভিযান চালিয়ে আব্দুল্লাহ (১৬) নামে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত আব্দুল্লাহ চকরিয়ার হারবাং নোনাছড়ি এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে তিন বন্ধু মিলে খুন করে মমিনুল ইসলামকে।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে দুপুরে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের অলিকাটা ঝিরি এলাকা থেকে মোটর সাইকেল চালক মমিনুল ইসলামের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে লামা থানা পুলিশ। নিহত মমিনুল ইসলাম চকরিয়া উপজেলার বড়ইতলী এলাকার মাইজপাড়ার বাসিন্দা নুরুল আলমের ছেলে।
র্যাব-১৫ এর (মিডিয়া এন্ড অপারেশনস) কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ্ মোহাম্মদ শেখ সাদী সাংবাদিকদের জানান, গত ২১ মে ফাইতং ইউনিয়নের অলিকাটায় পাহাড়ের ঢালে সাবেক আবু মেম্বারের লেবুর বাগানের পাশে অর্ধগলিত একটি লাশের সন্ধান মিলে। পরবর্তীতে জানা যায়, লাশটি চকরিয়ার বড়ইতলী এলাকার মোটর সাইকেল চালক মমিনুল ইসলামের। কিন্তু কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে কোনো ক্লু ছিল না। এর প্রেক্ষিতে র্যাব-১৫ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। অবশেষে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে ২৫ মে রাতে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি মো. আব্দুল্লাহকে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থেকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আব্দুল্লাহ জানায়, তার সহযোগী কায়সার (১৮), (পিতা- আব্দুর রহিম) এবং আব্দুর রহিম (১৮) (পিতা- ইলিয়াস) মিলে মেমিনুল ইসলামকে হত্যা করেছে। মমিনুল ইসলামের মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে গত ১৮ মে তারা তিনজন মিলে চকরিয়ার নোনাছড়ি স্লুইচ গেট নামক স্থানে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৮ মে মাগরিবের নামাজের পর আসামি আব্দুল্লাহ, কায়সার ও আব্দুর রহিম হারবাং নোনাছড়ি গ্রামের বাসিন্দা আসামি কায়সারের বোনের চা দোকানে বসে মমিনুলকে হত্যা করে তার মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করে এবং এই উদ্দেশ্য কায়সার তার বোনের দোকান থেকে একটি চাকু সংগ্রহ করে। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিন বন্ধু পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মমিনুলকে তার ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল নিয়ে লামা উপজেলার ফাইতংয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য নোনাছড়ি স্লুইচ গেট এলাকায় আসতে বলে। মমিনুল ইসলাম তাদের কথামতো মোটরসাইকেল নিয়ে রাত অনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে সেখানে আসে। এসময় সে আব্দুল্লাহ্, কায়সার ও আব্দুর রহিমকে নিয়ে ফাইতংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করে। কিন্তু তারা বড়ইতলী-চিউরতলী সড়কের অলিকাটায় পৌঁছালে আব্দুর রহিম কৌশলে প্রসাব করার জন্য মোটর সাইকেল থামাতে বলে। এরপর তিনজন মিলে মমিনুলকে মোটরসাইকেল থেকে টেনে হিঁছড়ে নামিয়ে জবাই করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে মমিনুলের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে। এক পর্যায়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে মমিনুলের লাশ নিচে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।
লামা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, আটক আব্দুল্লাহকে র্যাব লামা থানায় হস্তান্তর করেছে। ইতঃপূর্বে নিহত মমিনুল ইসলামের পিতা বাদী হয়ে এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে লামা থানায় মামলা দয়ের করেছেন।