মেয়েদের হ্যান্ডবলে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস ডেস্ক  | বৃহস্পতিবার , ১৮ মে, ২০২৩ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু আইএইচএফ চ্যালেঞ্জ ট্রফি ওমেন্স টুর্নামেন্টের ইয়ুথ বিভাগে (অনূর্ধ্ব১৭) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। গতকাল বুধবার জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ভারতকে ৪৬৪৩ গোল ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব১৭ ইয়ুথ হ্যান্ডবল দল। সাউথসেন্ট্রাল এশিয়া জোন২ এ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে বাংলাদেশ ইয়ুথ দল খেলবে এই টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডে। জাতীয় ও বয়সভিত্তিক কোনো পর্যায়ে কখনোই এর আগে ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। গতকাল খেলার প্রথমার্ধে ২০২০ গোলের সমতায় ছিল দুই দল।

বাংলাদেশভারতের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনাল ম্যাচ নাটকীয় মোড় নিয়েছিল বেশ কয়েকবার। দুদলের তীব্র লড়াইয়ে একবার ভারত এগিয়ে যায় তো; গোল করে আবারও সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। এক ঘণ্টার এই ম্যাচের প্রথমার্ধের ২০ মিনিটের সময় ১৬১০ গোল ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক মোছাম্মৎ মারফি, রুনা লায়লারা। মুহূর্মূহূ আক্রমণে ভারতের রক্ষণে কাঁপন ধরায় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধের লড়াইটা ছিল আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। দুই দলের খেলোয়াড়রা যেমন তাদের ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছেন; তেমনি পেশীশক্তিরও। মেজাজ হারিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হতে গিয়ে মাশুলও গুণতে হয়েছে দুই দলকে। খেলার ৪৪তম মিনিটে লাল কার্ডের শাস্তিতে ম্যাট ছাড়েন ভারতের প্রাধান্য বালাসো মানে।

তখন ৬ জনের দলে পরিণত হয় ভারত। বাংলাদেশের খেলোয়াড় ছিল ৭ জন। ওই সময়ও ম্যাচে পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সফরকারীরা। খেলার ৫০তম মিনিটে গিয়ে ভারতকে একেবারে চেপে ধরেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এ সময় গোলের পর গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনে স্বাগতিকরা। ৫৫তম মিনিটে গিয়ে টানা তিন হলুদ কার্ড (২ মিনিট করে মাঠের বাইরে থাকার শাস্তির ফল) দেখে ম্যাট ছাড়েন বাংলাদেশের টপ স্কোরার অধিনায়ক মারফি। তখনো ম্যাচে পিছিয়ে বাংলাদেশ। একটা সময় মনে হয়েছিল লিগ পর্বের মতো ফাইনালেও ভারতের কাছে হারতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু মারফির অনুপস্থিতিও বুঝতে দেননি রুনা লায়লা, তানিয়া, দ্বীপা রানীরা। পুরো ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্স ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫ গোল করেন অধিনায়ক মারফি। এছাড়া রুনা লায়লা ১৪, তানিয়া ১০, দ্বীপা রানী ৫, ফাতেমা প্রেমা ও সানিয়া আক্তার সমান ১টি করে গোল করেন। ভারতের পক্ষে রেনুকা সর্বোচ্চ ১৬ গোল করেন। ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের কোচ ডালিয়া আক্তার বলেন, ‘টুর্নামেন্ট শুরুর আগে আমি বলেছিলাম চমক দেখাবে আমার দল। সেটাই করে দেখিয়েছে তারা। মেয়েদের এমন পারফরম্যান্সে আমি অনেক খুশি। আমি আমার খেলোয়াড়ী জীবনে কখনো ভারতকে হারাতে পারিনি। কিন্তু প্রথমবার কোচ হয়ে সেই অর্জনে নাম লেখাতে পেরেছি। ভারতকে যে কোনো খেলায় হারানো কঠিন। হ্যান্ডবলে তো আরো কঠিন। সেই কঠিন কাজ আমার মেয়েরা করে দেখিয়েছি।’ পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন বাংলাদেশ ইয়ুথ টিমের অধিনায়ক মারফি। দলকে ফাইনালে তুলে আনা থেকে চ্যাম্পিয়ন করার পেছনে তার অনেক বড় ভূমিকা। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক বলেন, ‘আমি অনেক খুশি। কোচ, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা সবাইকে ধন্যবাদ। সবাই আমাদের অনেক সাপোর্ট করেছেন। আজ অনেক দর্শকরাও মাঠে এসে আমাদের সাপোর্ট করেছেন।’ তবে ইয়ুুথ দলের মতো পারফরম্যান্স করতে পারেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব১৯ জুনিয়র দল। এই বিভাগের ফাইনালে ভারত ৪৮১৭ গোলে হারিয়েছ বাংলাদেশকে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঢাকা যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা দল
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ১৫.৩৭ কোটি টাকা