কক্সবাজার এলএ শাখায় জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি ও দালালি করে অর্থ উপার্জনের অভিযোগে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর ছেলে হাসান মেহেদী রহমান ও আরো তিন দালালের ব্যাংক হিসেবে থাকা ৫৭ লাখ ২১ হাজার ৮৭৭ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার ঢাকা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংকসহ তিনটি ব্যাংকের কক্সবাজার শাখায় জরুরি চিঠি দিয়ে ব্যাংক হিসেবে থাকা এসব টাকা জব্দ করেন দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা। এরমধ্যে মুজিবুর রহমানের হিসাব থেকে ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৭ টাকা এবং মেহেদীর হিসাব থেকে ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৩৬ টাকা জব্দ করা হয়।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে ঘুষের ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকাসহ গ্রেপ্তার হন কক্সবাজার এলএ শাখার সার্ভেয়ার ওয়াশিম খান। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুদকের মামলার তদন্ত শুরু হলে গত তিনমাস ধরে কক্সবাজার জুড়ে এলএ শাখার দালালদের মধ্যে আতংক তৈরি হয়। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, তাঁর ছেলেসহ কক্সবাজারের দুইজন সাংবাদিক, কয়েজজন আইনজীবী, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলরসহ প্রায় অর্ধশত দালালের নাম উঠে আসে। তাছাড়া আসামিদের স্বীকারোক্তিতে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার বর্তমান ও সাবেক প্রায় ৫৭জন কর্মকর্তা কর্মচারীর নামে অধিগ্রহণের কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ উঠে আসে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ব্যাংক কক্সবাজার শাখায় মেয়র মুজিবুর রহমানের ব্যাংক হিসেবে থাকা ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৭ টাকা ও তাঁর ছেলে হাসান মেহেদী রহমানের এক লাখ ৬১ হাজার ৩৩৬ টাকা, ওয়ান ব্যাংক কক্সবাজার শাখায় এলএ শাখার দালাল রাহাতের হিসেবে থাকা ৩৮ লাখ ২৪ হাজার ও সাইফুল ইসলামের এক লাখ ৬১ হাজার ৩৩৬ টাকা আগে ঘুষের টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া সার্ভেয়ার নজরুলের মামলায় জব্দ দেখানো হয়। এছাড়া একই দিন আরো এক লাখ ৩০ হাজার ৩০৪ টাকা জব্দ করা হলেও ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দৈনিক আজাদীতে “প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম, নেপথ্যে স্ত্রী-শ্যালকসহ পৌর মেয়র, অনুসন্ধানে দুদক কক্সবাজার ভু-উপরস্থ পানি শোধনাগার স্থাপন প্রকল্প” শীর্ষক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর কক্সবাজার জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।