মেয়রসহ কাউন্সিলররা আগ্রহী, আপত্তি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার

অস্থায়ীদের চাকরি স্থায়ীকরণ ম চসিকের সাধারণ সভায় ক্ষোভ

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৯ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

 

 

 

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কাউন্সিলরগণ সংস্থাটির অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করার পক্ষে মত দিলেও আপত্তি জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম। ‘চসিক চাকরি বিধিমালা২০১৯’ অনুযায়ী স্থায়ী করার সুযোগ নাই বলে মনে করেন তিনি। প্রধান নির্বাহীর এ বক্তব্যকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে গতকাল অনুষ্ঠিত চসিকের সাধারণ সভা। আন্দরকিল্লাস্থ নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

জানা গেছে, চসিকে কর্মরত অস্থায়ী কর্মকর্তাকর্মচারীদের স্থায়ী করার পক্ষে মতামত দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্থায়ীকরণের আইনগত দিক খতিয়ে দেখতে গঠিত কমিটি। এতে ‘আদালতের রায়’ এবং ‘মানবিক ও সামাজিক’ প্রেক্ষাপট বিবেচনায় স্থায়ী করতে তিন দফা সুপারিশ করা হয়। গতকাল সাধারণ সভায় এ প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এতে একমত হন কাউন্সিলরগণ।

তবে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম শুধুমাত্র কমিটির মতামতের ভিত্তিতে স্থায়ী করা নিয়ে আপত্তি জানান। সভায় উপস্থিত এক কাউন্সিলর দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘প্রধান নির্বাহী বলেছেন চাকুরিবিধি অনুযায়ী স্থায়ী করার সুযোগ নাই। কমিটির দেয়া প্রতিবেদন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পেপার কাটিং এবং সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখা হবে। মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিবে সেটা কার্যকর করা হবে’। প্রধান নির্বাহীর এ বক্তব্যের পর কয়েকজন কাউন্সিলর বক্তব্য রাখেন। সবার বক্তব্যে ছিল ক্ষোভ। অভিন্ন সুরে তারা স্থায়ী করার পক্ষে মতামত দেন। অন্য কাউন্সিলররাও তাতে সমর্থন জানান।

৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী। তিনি বলেন, শুধু চিঠি লিখলে

মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না। সশরীরে গিয়ে মন্ত্রী ও সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সামগ্রীক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে হবে। অতীতে স্থায়ী করার দাবিতে যারা মামলা করেছে তারা জিতেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মোবারক আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন ও আফরোজা কালাম এবং কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসীম, জহরলাল হাজারীও বক্তব্য রাখেন। তারাও স্থায়ী করার পক্ষে কথা বলেন। অন্য কাউন্সিলরগণও সমর্থন জানান। সিটি মেয়রও অস্থায়ীদের স্থায়ীকরণে যা যা করা দরকার তার সবটুকু করবেন বলে আশ্বাস দেন।

এদিকে চসিকের জনসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সামগ্রীক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে কর্মচারীদের স্থায়ী করণের নিমিত্তে যথাযথ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এতে আরো বলা হয়, চসিকের কর্মপরিধি বৃদ্ধি পাওয়ার অনুমোদিত জনবল কাঠামোর বাইরে জরুরি প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় অস্থায়ী ভিত্তিতে কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই অস্থায়ী হিসেবে ২০২৫ বছর পর্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। অনেকে অস্থায়ীভাবে চাকরি শেষ করে অবসর যাচ্ছেন। কিন্তু চাকরি শেষে তেমন আর্থিক সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। তাছাড়া অস্থায়ীভাবে কর্মরতরা স্থায়ীদের সমান কাজ করেও চাকরি স্থায়ী না হওয়ার ফলে পদোন্নতিসহ সরকার প্রদত্ত সুযোগসুবিধা না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে চসিকের সুষ্ঠভাবে নাগরিক সেবা প্রদান কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী গত ১৯এপ্রিল অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অস্থায়ী কর্মচারীদের আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থায়ী করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন শ্রমিক কর্মচারী লীগ সি বি এ দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ ও কাঁচা ঘরের মালিকদের গৃহকর পরিশোধ করতে হবে না : মেয়র
পরবর্তী নিবন্ধজিপিএ-৫ এ রেকর্ড