মৃত্যু পরোয়ানা শোনানো হয়েছে যুদ্ধাপরাধী কায়সারকে

| শুক্রবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:১৩ পূর্বাহ্ণ

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক মুসলিম লীগ নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শুনিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। লাল কাপড়ে মোড়ানো মৃত্যু পরোয়ানাটি গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছানোর পর বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সেটি তাকে পড়ে শোনানো হয় বলে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুভাষ কুমার দাশ জানান। তিনি বলেন, পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর তিনি বলেছেন, আপিল বিভাগের কাছে রিভিউ চাইবেন। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর বুধবার বিকালে তা সুপ্রিম কোর্ট থেকে পাঠানো হয় যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। এরপর ট্রাইব্যুনাল গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু পরোয়ানা জরি করে। কারাগারের পাশাপাশি আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পরোয়ানার অনুলিপি পাঠানো হয় বলে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার সাঈদ আহমদ জানান। নিয়ম অনযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন এইচ এম এরশাদের সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার। এর মধ্যে তিনি আবেদন না করলে যে কোনো দিন রায় কার্যকর হতে পারে। খবর বিডিনিউজের।
কায়সারের আইনজীবী তানভীর আহমেদ আলামিন বলেছেন, রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পেলে তারা রিভিউ আবেদন করবেন। রিভিউ পিটিশন করার জন্য আমার মাক্কেল আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। রায়ের প্রত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করা আছে। হয়ত কয়েকদিনের মধ্যেই পেয়ে যাব। যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউয়ের আবেদন করে সাজা কমানোর নজিরবিহীন। এর আগে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সব যুদ্ধাপরাধী রিভিউ আবেদন করেও সর্বোচ্চ সাজার রায় বদলাতে পারেনি।
রিভিউ আবেদন খারিজ হলেও অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন সৈয়দ কায়সার। তিনি যদি প্রাণভিক্ষা না চান এবং চেয়েও যদি ক্ষমা না পান, তাহলে রায় কার্যকরের ক্ষণগণনা শুরু হবে। রায় কার্যকরের আগে তিনি শেষবারের মতো পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।
২০১৩ সালের ১৫ মে ট্রাইব্যুনাল কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে সেই রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় মুসলিম লীগের এই সাবেক নেতাকে। বয়স ও স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতি বিবেচনায় ট্রাইব্যুনালে তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়। যুদ্ধাপরাধের ১৬টি ঘটনায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে পরের বছর ২ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ কায়সারের বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল। সেই বিচার শেষে ২০১৪ সলের ২৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনির্বাচনী সমাবেশে একে অপরকে কটাক্ষ ট্রাম্প-ওবামার
পরবর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ