পাকিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় প্রাণহানি বেড়েই চলেছে। সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে কমপক্ষে ১১৯ জন। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,০৩৩। এছাড়া ঘরছাড়া হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। শনিবার কাবুল নদীর জলের তোড়ে খাইবার পাখতুখোওয়া অঞ্চলে একটি বড়সড় সেতু ভেসে গিয়েছে। এক রাতের মধ্যে গোটা সেতু ভেসে যাওয়ায় একটা গোটা জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্যার তাণ্ডব যেভাবে ক্রমাগত বাড়০ছে তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জোট সরকার। অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং সংযুক্ত আমিরাতসহ আরো কিছু দেশ এরই মধ্যে সাহায্য পাঠিয়েছে, কিন্তু তা দিয়ে সরকার সামাল দিতে পারছে না।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান সুফি সাংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য সরকার এখন মরিয়া। তিনি বলেন, এমনিতেই অর্থনীতিতে সংকট চলছিল। তা উত্তরণের জন্য আমরা যখন চেষ্টা করছি, সেসময় এই দুর্যোগ এসে হাজির হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের উন্নয়ন খাতের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তহবিল সরিয়ে এনে ত্রাণের কাজে লাগাতে হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এখন পাকিস্তানের প্রায় তিন কোটি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। চারসাড্ডা জেলার হাজার হাজার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন। পাকিস্তানের জলবায়ু সংক্রান্ত মন্ত্রী একে ‘ঐতিহাসিক বিপর্যয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। শনিবার সোয়াত জেলার অতিরিক্ত উপকমিশনার আবরার ওয়াজির জানান, ওই জেলায় বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৫টি সেতু পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধু প্রদেশের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, দুর্যোগের মাত্রা এমন হবে কল্পনা করতে পারেননি। অগস্টের গড় বৃষ্টিপাতের প্রায় আট গুণ হয়েছে এ বছর।