নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষান্মাসিক (অর্ধবার্ষিক) মূল্যায়নের প্রশ্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গতকাল বৃহস্পতিবার এনসিটিবির চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মশিউজ্জামান স্বাক্ষরিত এক ‘জরুরি বার্তায়’ মূল্যায়নের প্রশ্নের মত স্পর্শকাতর বিষয়ে সবাইকে দায়িত্বশীল হওয়া ও সতর্কতার অবলম্বনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। খবর বিডিনিউজের।
ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন সম্পর্কিত জরুরি বার্তায় বলা হয়, প্রতিটি বিষয়ের ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ মূল্যায়নের আগের দিনে নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে। যদিও এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ কোনো শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। তারপরও পরীক্ষার হলে প্রবেশের আগে তা কিছু প্রতিষ্ঠানপ্রধানের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে কিছু অসাধু ব্যক্তি ও সংস্থা এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ বিভিন্ন অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক ও বিভ্রান্তিকর সমাধান ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে।
এই বিভ্রান্তিকর সমাধানগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত করছে এবং এতে মূল্যায়ন কার্যক্রমে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে বলেও এনসিটিবি মনে করছে। বার্তায় বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ বাইরের কারো সঙ্গে শেয়ার করা ‘শিক্ষকতার নৈতিকতা বিরোধী’ কাজ এবং ‘চরম অশিক্ষকসুলভ আচরণ’। নৈপুণ্য অ্যাপের ইউজার আইডির মাধ্যমে এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ ডাউনলোড ও বিতরণ কার্যক্রম ট্র্যাকিং করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা আছে। এই ট্র্যাকিংয়ের আলোকে কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ কোন অপ্রাসঙ্গিক কমিউনিটি বা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ারের বিষয়টি প্রমাণিত হলেও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন নিয়মে বুধবার থেকে সারা দেশেই মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন বা প্রচলিত অর্থে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অধীন সারা দেশের এক কোটির মত শিক্ষার্থী এই মূল্যায়ন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাক্রমের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ‘শিক্ষার্থী নির্দেশিকা’ বা প্রশ্ন পরীক্ষার আগের দিন প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে অনলাইনে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধানরা তা ডাউনলোডের করে ফটোকপির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তা সরবরাহ করছেন।
গত বুধবার ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ষাণ্মাসিক (অর্ধবার্ষিক) মূল্যায়নের প্রথম দিনের পরীক্ষা হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই প্রশ্ন আগের দিন রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর সমাধানও ছড়ানো হয় ইউটিউব ও ফেইসবুকে।