কেমন একটা কঠিন সময় অতিবাহিত হচ্ছে, আজ প্রায় সতেরো মাস। স্বাভাবিক ভাবে সব কিছুই এলোমেলো। সব কিছুতে স্থবিরতা। স্বাভাবিকতা পরিবর্তন হচ্ছে। বেশির ভাগে একটা হতাশার কালো মেঘ যেন সারাক্ষণ ঘিরে আছে। এই অবস্থায় শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকাটা খুব দরকার। ভালো না লাগা বা ইচ্ছে না হওয়া খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়,তবে ভালো না লাগা কিংবা ইচ্ছে না হওয়া টাকে খুব একটা দাম দেওয়া একেবারে উচিত নয়। জীবনে ভালো লাগা কিংবা ইচ্ছে থেকেও অনেক বেশি দামী কথা প্রয়োজন। যেটা করার প্রয়োজন সেটাকে দাম দিতে হবে সবচেয়ে বেশি। যেটা প্রয়োজন সেটাকে যদি আমরা আন্তরিক ভাবে উপলব্ধি করতে পারি এবং সেই বরাবর কাজ করি তবে আমাদের পরবর্তী জীবনে অনেক ভালো লাগার পথ তৈরি হবে। তাই প্রয়োজনীয় কাজ করতে ইচ্ছে না হলেও চেষ্টা করা উচিত। সময়ে যে কাজ করার কথা, যে কাজের জায়গায় যাওয়ার কথা তা যেন বিঘ্নিত না হয়। এই যে সময়ানুবর্তিতা এটা একটা খুব দামী, অত্যন্ত দামী উপাদান জীবনে ভালো লাগার ও ভালো থাকার জন্যে।যে নিয়ম মানতে শিখে, নিয়ম মেনে চলে, তাঁর জীবনে সময় -সম্পদকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা যাবে। সেটা আমাদের বুঝতে হবে, ভালো লাগছে না বা ইচ্ছে হচ্ছে না বলে কাজ-কর্ম ছেড়ে শুয়ে শুয়ে টিভি দেখলাম বা খেললাম তা করলে হবে না।যে ছেলেটি খেলার জন্য খেলে,খেলা দিয়ে জীবনে বড় হবে সেই সারাক্ষণ খেলতে পারে কিন্তু আমার ভালো লাগে না বলে খেলছি সেটা ঠিক নয়। মূল্যবোধও আমাদের জীবনের অন্যতম একটা সম্পদ, কোনটা সঠিক, কোনটা বেঠিক সমাজের চতুর্দিকে নজরদিয়ে সেটাকে তুলে আনতে হবে। বুঝতে হবে, শিখতে হবে কাকে, কোথায় ও কিভাবে সম্মান করতে দেয়া উচিত, কোন বিষয়ে সম্মান দেয়া উচিত, কোনটা আগে করবো কোনটা পরে করবো। মূল্যবোধের পাশাপাশি নিজের ভিতর তৈরি করতে হবে সহমর্মিতাবোধ। সবই আমি নেব না, সবই আমার জন্য নয়,দুটো অন্য মানুষের জন্যও। আমরা যখন রোজগার করি তা কি শুধু নিজের জন্য হতে পারে? হতে পারে না। আমার যখন স্বজ্ঞানে নিজের ইচ্ছায় অন্যের জন্য কিছু করতে চাই, ভাবতে চাই তা আমার সহমর্মিতা। সহমর্মিতা আমার শুধু সম্পদ নয়, আমার মনের সৌন্দর্যের টুকরো। আমি সুন্দর হতে চাই শুধু সুন্দর পোশাক দিয়ে নিজেকে বাহ্যিক ভাবে নয় অন্তরেও সুন্দর হবো। সহমর্মিতা সেই অন্তরের সৌন্দর্যের অন্যতম উপাদান। এভাবে আমরা নিজেকে না হারিয়ে নিজের আত্মসম্পদ ব্যবহার করে পরিপূর্ণ হবো।