চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় মারছা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস ও পর্যটকবাহী প্রাইভেট নোহা গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গাড়ি দুটি দুমড়ে–মুচড়ে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের পাঁচ নারী। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। নিহতরা সবাই নোহা গাড়ির যাত্রী এবং সকলেই পর্যটক বলে নিশ্চিত করেছেন মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ। আহতদের মধ্যে দুইজন নোহা গাড়ির পর্যটক এবং অন্যরা মারছা বাসের চালক–সহকারীসহ যাত্রী বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী সেনা ক্যাম্পের একটু দক্ষিণাংশে সেগুন বাগান এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়।
নিহতরা হলেন কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের বাতিসা এলাকার এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আকতার (৬০), তার মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২৪), রুমানার ছেলে আমিনুল হকের স্ত্রী লিজা মজুমদার (২৫), লিজার মা রাশেদা শিল্পী (৫০) ও বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা মজুমদার (২৪)। আহত ব্যক্তিরা হলেন এনামুল হক, তার ছেলে মাইক্রোবাস চালক আমিনুল হক ও তার শিশুসন্তান সাদমান।
অপরদিকে মারছা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের চালক, সহকারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মহাসড়কের ডুলাহাজারাস্থ মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) মো. মেহেদী হাসান ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত নোয়া গাড়িতে থাকা পাঁচজন নারী পর্যটক নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি–মালুমঘাট হাইওয়ে থানা পুলিশ আরও জানান, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সপরিবারে প্রাইভেট নোয়া গাড়িতে করে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন বেড়াতে। তাদের বহনকারী নোয়া গাড়িটি মহাসড়কের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী সেনা ক্যাম্প অতিক্রম করে ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকের কাছে যাওয়া মাত্রই বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা চট্টগ্রামমুখী মারছা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে নোয়া গাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত এবং মারছা গাড়ির সম্মুখভাগ দুমড়ে–মুচড়ে যায়। এ সময় গুরুতর আহত হন নোয়া গাড়ির ভেতর থাকা চালকসহ একই পরিবারের ৮ জন সদস্য। এছাড়াও মারছা বাসের চালক–সহকারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার অভিযানে নামেন সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে পাঁচজন নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্য আহতরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তদ্মধ্যে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় দুই পর্যটককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান হাইওয়ে পুলিশের ওসি।
পুলিশ কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, নিহতরা সবাই পর্যটক এবং তাদের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে। দুর্ঘটনার কারণে মহাসড়কে অন্তত এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় দুর্ঘটনায় পতিত যানবাহন দুটি সরিয়ে নেওয়ার পর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ শেষে নিহতদের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।












