মুহররম মাসের পবিত্র আশুরা

মারজিয়া খানম সিদ্দিকা | শনিবার , ২৯ জুলাই, ২০২৩ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

আমাদের যত ইবাদাত শুধু আল্লাহ তাআলার জন্য, আমাদের যত প্রার্থনা তাও শুধু আল্লাহরই নিকট, যিনি মানব জাতিকে তাঁর সৃষ্টির সেরা মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন। তিনি মানব জাতির জন্য সীরাতে মুস্তাকীম বা সহজ সরল পথের সন্ধান যুগিয়েছেন যুগেযুগে। হিজরি সনের প্রথম মাস মুহররম। এ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম। বিশেষ করে ১০ই মুহররম অর্থাৎ আশুরার দিন।

আশুরার পবিত্র দিনটির মাহাত্ম্য বহুমুখী। হযরত হোসাইন (রা.) এদিন কারবালার প্রান্তরে মর্মান্তিকভাবে শহীদ হন। এ ঘটনা সমগ্র মুসলিম জাতিকে বিমর্ষ করেছে। করেছে দুঃখী, ম্লান। কেননা হযরত হোসাইন (রা.) ছিলেন আমাদের প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মদ (.) অতি প্রিয়, অতি আদরের নাতি, বেহেশতের সর্দার মা ফাতিমার কনিষ্ঠ পুত্র। এ নাতি ছোটকালে যখন আমাদের প্রিয় নবীজী নামাযের সিজদাহ রত অবস্থায় তাঁর পিঠে চড়ে বসতেন, তিনি নবীজীর পিঠ থেকে না নামা পর্যন্ত নবীজী সিজদাহ্‌ থেকে উঠতেন না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ দিনেই হযরত আদম(.) এর তওবা কবুল করেছিলেন। ভয়ংকর নমরূদ হযরত ইব্রাহিম (.)কে যখন জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করেছিল আল্লাহ পাক স্বয়ং অগ্নিকুণ্ডকে ঠাণ্ডা ও আরামপ্রদ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই আশুরার দিনেই আল্লাহ পাক হযরত মুসা (.) ও তাঁর স্বগোত্রীয় বনি ঈসরায়িলদের ফেরাউন এর অত্যাচার থেকে নাজাত দিয়েছিলেন।

মহানবী(.) মদিনায় হিজরত করে আসার পর তিনি মদিনার ইহুদিদের ১০ই মুহররম রোজা রাখতে দেখেন। তিনি ইহুদিদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন যে হযরত মুসা(.) ফেরাউন এর অত্যাচার থেকে নাজাত পাওয়ায় তারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে একটি রোজা রাখে। মহানবী (.) তখন হযরত মুসা(.) অনুসরণ করার অধিকার বেশি রাখেন বলে তিনি আশুরা এবং তার আগের দিন বা পরের দিন দুটি রোজা রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন এবং সাহাবীদেরও নির্দেশনা দিলেন। উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের হযরত হোসাইন (.)এর শাহাদাত এর জন্য এমন একটি দিন বেছে নিয়েছিলেন যে দিনের কারণে তার শাহাদাত এর মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি পায় যা মুসলিম বিশ্বে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, হয়ে আছে চির ভাস্বর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্ট্রোক ও হার্ট এটাক জনিত মৃত্যু বয়সের কারণে নাকি অন্য কিছু?
পরবর্তী নিবন্ধঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর: শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক