আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, “আমরা কোনো সংঘাতে যাব না। আমরা যুক্তি-তর্ক দিয়ে বলব মূর্তি আর ভাস্কর্য এক নয়। আজকে যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা কি জানে না সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলোতে ভাস্কর্য আছে? সেখানে ভাস্কর্য ইসলামবিরোধী নয়, বাংলাদেশে কেন এটা অযৌক্তিক?”
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ শনিবার (৫ ডিসেম্বর) তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিষয়টি হ্যান্ডল করছেন প্রধানমন্ত্রী। যেভাবে তিনি করোনা মোকাবেলা করছেন, সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে তিনি এখানে এসেছেন। কাজেই তিনি জানেন কোন পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করতে হবে।” বিডিনিউজ
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের প্রকাশ্য বিরোধিতা করার পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। তারপর হেফাজতের অন্য নেতারাও সরব হয়েছেন।
হেফাজত নেতাদের এই অবস্থানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো কোনো নেতা যেমন কড়া ভাষায় কথা বলছেন অন্যদিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ভাস্কর্যবিরোধীদের রুখে দাঁড়ানোর এবং বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দেওয়ায় হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, “আমরা সরকারে আছি। সব ব্যাপারে মাথা গরম করলে চলবে না।”
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে দোয়েল চত্বরে জাতীয় তিন নেতার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধি দল ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, নির্বাহী সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তিনি আমাদের জাতীয় নেতা, গণতন্ত্রের মানসপুত্র, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু। পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক আমলে গণতন্ত্রের জন্য তিনি বারবার লড়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, দেশত্যাগ পর্যন্ত করেছেন। তিনি বারবার বলতেন গণতন্ত্রই আমার জীবনের মূলমন্ত্র। শাসনতন্ত্রের প্রশ্নে জনগণের রায়ই শেষ কথা, তিনি সেটা বলতেন।”
তিনি বলেন, “এদেশে একটি মহল আছে যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও আচরণে, তাদের কর্মকাণ্ডে কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আছে এরা গণতন্ত্রের শত্রু। এরা গণতন্ত্রের বিকাশ চায় না। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করতে হবে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ছাড়া কেউই করে নাই। যাদের নিজেদের ঘরে গণতন্ত্র নেই তারা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে এটা আশা করা যায় না।”