মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য প্রয়োজন

রাঙ্গুনিয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২১ জানুয়ারি, ২০২২ at ৭:২৭ অপরাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে। এটির অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের যেভাবে ঐক্য সংহতি প্রয়োজন, যেটি আগে অনেকটা ছিল সেটি এখন নষ্ট হয়ে গেছে। তাই মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধে মুসলিম বিশ্বের ঐক্য প্রয়োজন।”

তিনি বলেন, “আজকে সারা দুনিয়ায় মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন হচ্ছে। ফিলিস্তিনীদের শত শত হাজার বছরের বসতভূমি দখল করে ইসরাইলী ইহুদিরা সেখানে বসতঘর নির্মাণ করছে। সেটির প্রতিবাদে যখন ফিলিস্তিনিরা প্রতিবাদ করে ঢিল ছোড়ে, সেটির প্রতিত্তোরে গুলি ছুড়ে জবাব দেওয়া হয় কিন্তু সমস্ত মুসলিম দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে যেভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানো প্রয়োজন সেভাবে দাঁড়াতে পারছে না।”

গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) রাতে রাঙ্গুনিয়ার ঐতিহ্যবাহী রাহাতিয়া দরবারে ওরছে নঈমী উপলক্ষে আয়োজিত মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন দরবারের সাজ্জাদানশীন সৈয়দ ওবাইদুল মোস্তফা নঈমী (মা.)।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “মায়ানমারে মুসলমানদের যেভাবে বিতাড়িত করা হয়েছে, যেভাবে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে সেটি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সীমান্ত খুলে দিয়েছে। আমরা তাদেরকে এদেশে খাবার দিচ্ছি। অন্য দেশও সহায়তা দিচ্ছে। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যারা মানবতায় তাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছে। উখিয়া ও টেকনাফের মানুষ তাদের যেভাবে সাদরে গ্রহণ করেছে এজন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “ইসলামের মূল মর্মবাণী হচ্ছে, মানুষের প্রতি দয়া ও সেবা করা। ইসলামের এই মূল মর্মবাণী যদি আমরা বুকে ধারণ করি, সেটি অনুশীলন করি তাহলে সমাজে হানাহানি, রাষ্ট্রে হানাহানি, দুনিয়ায় হানাহানি লোপ পাবে। আমরা সকলেই জম্মগ্রহণ করেছি, নিশ্চয়ই একদিন মৃত্যুবরণ করব। প্রতিদিন আমরা আস্তে আস্তে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। একথা যদি আমরা মাথায় রাখি তবে প্রত্যেকে ঈমানদার হতে পারব।”

মহান মুক্তিযুদ্ধে আল্লামা নুরুচ্ছাফা নঈমীর অবদান উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “আল্লামা নুরুচ্ছাফা নঈমী সাহেব আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে মানুষকে অত্যাচার নির্যাতনের হাত থেকে তিনি রক্ষা করেছিলেন। সেটি এই জনপদের মানুষ যেমন জানে, তেমনি ইতিহাসের পাতায় তা লেখা থাকবে এবং আছে।”

রাঙ্গুনিয়ায় মসজিদ-মাদ্রাসায় সহায়তার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আপনারা আমাকে পর পর তিনবার এমপি নির্বাচিত করেছেন। আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর মসজিদ-মাদ্রাসা আলেমদের জন্য যত কাজ করেছি, আমি নিজেও ধারণা করতে পারি নাই এতো কাজ করতে পারব। রাঙ্গুনিয়ায় ১৬টারও বেশি নতুন মসজিদ ভবন হয়েছে। আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। আগেও অনেকে এমপি ছিলেন, একটি মসজিদ দেখাতে পারবে না নিজের উদ্যোগে করেছেন। রাঙ্গুনিয়ায় দেড়শতাধিক মসজিদ ভিত্তিক মক্তব আছে। নুরুল উলুম কামিল মাদ্রাসার যে চারতলা ভবন হয়েছে এটিও আমাদের সরকার এবং আমার প্রচেষ্টার কারণে হয়েছে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি সকলকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। কে কোন দল করে সেটা বিবেচনা না করে সকলকে সমান চোখে দেখেছি। কাজের চাপে কোনো সময় কারো সঙ্গে যদি রাগারাগি করি তাহলে পরে তার ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করি সকলকে সহযোগিতা করার জন্য।”

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধশনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৪৪৫