নগরের মুরাদপুর মোড়ে কালভার্ট নির্মাণ শেষ হলেও যান চলাচলের জন্য তা উন্মুক্ত করে না দেয়ায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সাধারণ সভায় ক্ষোভ জানানো হয়। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানি পশুর হাট বসার আগে কালভার্টটি যান চলাচলে উন্মুক্ত করে না দিলে বিবিরহাট পশুর হাট ঘিরে চসিকের রাজস্ব হারানো এবং আতুরার ডিপো এলাকায় চামড়াশিল্পেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হয় ওই সভায়।
গতকাল বুধবার আন্দরকিল্লাহস্থ নগর ভবনে এ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। সভায় জানানো হয়, ওয়াসার পাইপ লাইন পুনঃসংযোগ জটিলতায় কালভার্টটিতে সংযোগ সড়ক করা হচ্ছে না। তাই বিষয়টি সমাধানে চসিক, ওয়াসা এবং সিডিএ’র সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয় সভায়।
সভায় উপস্থিত চসিকের পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোবারক আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ওয়াসা জানিয়েছে পাইপ ঠিক করতে একটু সময় লাগবে। এদিকে কোরবানও ঘনিয়ে আসছে। মুরাদপুরের পাশেই বিবিরহাটে সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। গাড়ি যেতে না পারলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বেপারিরা ওই হাটে গরু নিয়ে যেতে আগ্রহ দেখাবে না। একইভাবে ক্রেতাদের সমস্যা হবে। তাই সভায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। কোরবানি পশুর হাট বসার আগে ওয়াসা পাইপ লাইন বসাতে পারবে কীনা তা খতিয়ে দেখবে কমিটি। যদি এর আগে বসাতে না পারে তাহলে আপাতত সংযোগ সড়ক ঠিক করে যান চলাচল করে দেয়া হবে। পরে ওয়াসা তাদের পাইপ লাইন বসাবে। তাছাড়া গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ওয়াসা যেন রাতের বেলা তাদের কাজ করে সে আহ্বানও জানানো হয় সভা থেকে।
সাধারণ সভায় কালভার্ট এবং সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি প্রসঙ্গে ওয়াসার প্রতিনিধির উদ্দেশে সিটি মেয়র বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রাম ওয়াসার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ওয়াসা নতুন তৈরি করা রাস্তা কেটে জনভোগান্তি তৈরি করছে। এর মাধ্যমে নষ্ট করছে সরকারের বাজেট আর সৃষ্টি করছে জনঅসন্তোষ। কোরবানির ঈদের আগেই হাটহাজারী সড়কে ওয়াসার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। কারণ এই পথটি দিয়ে কোরবানির পশু বিবিরহাট বাজারসহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছায়। আবার এই পথ দিয়ে কোরবানির বর্জ্য শহর থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। এছাড়া আতুরার ডিপোর কারখানাগুলোতে এপথ দিয়ে চামড়া পরিবহন করতে না পারলে আর্থিক ক্ষতি ও শহরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে।
জানা গেছে, মুরাদপুর মোড়ে পুরনো বঙ কালভার্ট ভেঙে নতুন করে নির্মাণ কাজ শুরু হয় গত ১৭ জানুয়ারি। ওইদিন থেকে সাময়িক বন্ধ রাখা হয় মুরাদপুর–অঙিজেন সড়কে যান চলাচল। দুই সপ্তাহ আগে নতুন কালভার্টটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। সেখানে সংস্থাটির তিনটি পাইপলাইন রয়েছে। এগুলোর প্রতিটির ব্যাস হচ্ছে যথাক্রমে ৯০০ মিলিমিটার, ৪৫০ মিলিমিটার এবং ৩০০ মিলিমিটার। কালভার্ট নির্মাণের সুবিধার্থে পাইপগুলো দুই পাশ থেকে কেটে ফেলা হয়। এখন নতুন পাইপ দিয়ে সেগুলো পুনঃসংযোগ করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পের আওতায় কালর্ভাটটি নির্মাণ করা হয়।
মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী আজাদীকে বলেন, কালভার্ট নির্মাণ কাজ শেষ। আমরা শাটারিংও খুলে ফেলেছি। এখন সেখানে ওয়াসার যে পাইপ রয়েছে তার কাজ করা হচ্ছে। ওটা শেষ হলেই আমরা দুই পাশে সংযোগ সড়ক করে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিব। পাইপ লাইনের কাজ দ্রুত শেষ করা নিয়ে ওয়াসার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে বলেও জানান তিনি।












