চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্তময় সড়ক চকবাজার থেকে মুরাদপুর যাওয়ার পথেই বৌদ্ধমন্দির মোড়। মোড়টি পার হতে গিয়ে চোখে পড়ল চলাচলরত পথচারীরা নাকমুখ চেপে আছেন। কেউবা নিশ্বাস বন্ধ করে দ্রুত হেঁটে যাচ্ছেন। এখানে রাস্তার পাশেই গড়ে উঠেছে বিশাল ময়লার ভাগাড়। প্রতিদিন শত শত স্কুলগামী শিক্ষার্থী, রোগী ও সাধারণ পথচারীদের এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। আশপাশে রয়েছে আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানালেন, বর্ষাকালে সমস্যা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। বৃষ্টির পানিতে ময়লা ও পচা আবর্জনা রাস্তার কাদায় মিশে একাকার হয়ে যায়। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। অনেক সময় ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানে ময়লা ফেলার কারণে এলাকাটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। সকালে কিছু ময়লা সরালেও বিকেল নাগাদ আবার স্তুপ জমে যায়। এতে শুধু পরিবেশই নয়, জনস্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেয়রকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
নুরুল আমিন নামের একজন বাসিন্দা জানান, বৃষ্টি হলে রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না। পচা পানি ও ময়লা মিশে রাস্তা দুর্গন্ধে ভরে যায়। আশপাশে বাচ্চাদের স্কুল আছে তারা প্রতিদিন এই গন্ধের মধ্যে যাতায়াত করছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ ওই ময়লার ভাগাড়টি এখন মাদকাসক্তদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই সেখানে নিয়মিতভাবে মাদকসেবীদের উপস্থিতি দেখা যায়। তারা মাঝে মাঝে ময়লার স্তুপে আগুন ধরিয়ে দেয়, যা বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা তৈরি করছে। এই বিষয়ে তাদের নিষেধ করা হলেও তারা কোনো ধরনের কর্ণপাত করছেন না।
এদিকে আবর্জনার ভাগাড় বা স্তুপটি আবাসিক এলাকার ওই স্থান থেকে সরিয়ে নিতে গত ২ অক্টোবর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাতের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে তারা জানান, আবর্জনার ভাগাড় বা স্তুপটি অন্যত্র সরিয়ে নিলে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি পাবেন এবং শহরের পরিবেশও আরও পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ হবে বলে উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন করপোরেশন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন জায়গায় খোলা ডাম্পিং এর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ঐ এলাকায় ডোর টু ডোর প্রকল্পের আওতায় তারা সেবা নিতে না চাওয়ায় সেসব ময়লা রাস্তার পাশে ফেলে এটিকে ভাগাড়ে পরিণত করছে। এই রকম বেশকিছু খোলা ডাস্টবিনকে আমরা চিহ্নিত করেছি পরিবেশ নষ্ট করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনস্বাস্থ্যবিদদের মতে, ময়লায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও রোগ জীবাণু জন্মাতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া থেকে মানুষের ফুসফুসে রোগ হতে পারে। সবচেয়ে বেশি শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়া আশপাশের মানুষ দুর্গন্ধের কারণে মানসিক অস্বস্তি বোধ করতে পারে।












