কক্সবাজার শহরজুড়েই গিজগিজ করছে মানুষ আর মানুষ। এমনকি সমুদ্র সৈকতেও এখন হাজারো মানুষের ভিড়। মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেয়ার সুযোগ টুকুও যেন কেড়ে নিয়েছে নগর সভ্যতা। কিন্তু কস্তুরাঘাট–খুরুশকুল ব্রিজ বদলে দিয়েছে শহরের একাংশের মানুষের জীবন। পাশাপাশি খুরুশকুলসহ জেলা সদরের উত্তর অঞ্চলের মানুষের জীবনও বদলে দিয়েছে ব্রিজটি। তাই সুনসান প্রাকৃতিক পরিবেশ আর শীতল বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিতে শহরের মানুষ এখন বৈকালিক অবসরে ছুটছে নদীর ওপারে খুরুশকুলে। কিন্তু ব্রিজ পার হয়ে কয়েকশ ফিট সামনে গেলেই পথচারীকে নাক চেপে পথ চলতে বাধ্য করে মুরগীর বিষ্ঠার দুর্গন্ধ।
কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রস্থল জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে মাত্র ২শ গজ উত্তরে কস্তুরাঘাট–খুরুশকুল ব্রিজ। খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের সাথে শহরের যোগাযোগের জন্য ৪৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় চার মাস আগে গতবছর ১১ নভেম্বর এই ব্রিজটি উদ্বোধন করেন। এরপর কিছুদিন যান চলাচলের জন্য ব্রিজটি বন্ধ রাখা হলেও ডিসেম্বরের শেষদিকে আবারও খুলে দেওয়া হয়। আর এরপর থেকেই যেন শহরের মানুষের বৈকালিক অবসর কাটানোর জায়গা হয়ে ওঠেছে খুরুশকুল। কিন্তু ব্রিজ পার হয়ে কিছুদূর সামনে আগালেই নাকে ভেসে আসে মুরগির বিষ্ঠার দুর্গন্ধ। যেন পথচারীকে খুরুশকুলে স্বাগত জানায় তারা! খুরুশকুল ব্রিজ পার হয়ে মাত্র ৪–৫শ ফুট পথ সামনে গেলেই তিন রাস্তার মোড়। স্থানীয়দের কাছে এটি গোলচত্বর নামে পরিচিত। এখান থেকে একটি পথ সোজা খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের দিকে চলে গেছে। আর অপর রাস্তাটি ডানে বেঁকে খুরুশকুল মনুপাড়ার দিকে চলে গেছে গড়ে। আর এই মোড়েই গড়ে ওঠেছে বেশ কয়েকটি মুরগীর ফার্ম। আর এসব খামারের মুরগির বিষ্ঠার তীব্র দুর্গন্ধে পথচারীরা ছাড়াও আশেপাশের লোকজনও চরম অতিষ্ঠ বলে জানান মিডওয়ে সায়েন্টিফিক হ্যাচারির একজন কর্মচারী।
শহরের কস্তরাঘাটে বাসিন্দা ও চাকরিজীবী খোরশেদ আলম বলেন, বৈকালিক অবসরে মাঝেমধ্যে ছুটে যাই নদীর ওপারে, সময় কাটাই শীতল বাতাস আর সুনসান নিরব প্রাকৃতিক পরিবেশে। কিন্তু দুর্গন্ধের কারণে মাঝেমধ্যেই মনটা বিগড়ে যায়। ওপারের সৌন্দর্য ও পরিবেশ যেন ম্লান করে দিচ্ছে কয়েকটি মুরগির ফার্ম।
একই কথা জানান শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা মাঈনুদ্দিন। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে সপরিবারের নদীর ওপারে বেড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফিরে আসার পথে কয়েকশ ফুট এলাকাজুড়ে মুরগির বিষ্ঠার তীব্র দুর্গন্ধে তার শিশু সন্তানটি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, জনৈক রফিক, দিদার ও মোফাচ্ছেল এসব মুরগির খামারের মালিক। তাদের মুরগির খামারের কারণে আশেপাশের পরিবেশ দূষণের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়রা এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
এদিকে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।