মুদ্রাস্ফীতির তারতম্যের সঙ্গে মিলিয়ে বাদী দেনমোহর পাবেন মর্মে যুগান্তকারী এক রায় দিয়েছেন কুমিল্লার পারিবারিক আদালত। দেশে এই প্রথম দেনমোহর নিয়ে এমন ব্যতিক্রমধর্মী রায় হলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় কুমিল্লার পারিবারিক আদালতের বিচারক শেখ সাদী রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল–১ এর সরকারি কৌসুলী এ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। খবর বাসসের।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. আজাদ হোসেন বলেন, রায়ে বলা হয়, বাদী ও বিবাদীর বিয়ে হয়েছিল ২০২২ সালে। এখন ২০২৫ সাল, প্রতিবছর মুদ্রাস্ফীতির কারণে টাকার মানের তারতম্য ঘটে যা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে স্পষ্ট। এমতাবস্থায়, দেওয়ানি কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারা প্রয়োগ করে মুদ্রাস্ফীতির তারতম্য অনুসারে বাদীর দেনমোহরের দু’লাখ টাকার প্রকৃত মূল্য ২ লাখ ৬২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলো এবং বাদী ওই টাকা পাওয়ার হকদার। ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে নির্ধারিত ওই অর্থ পরিশোধ করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক জজ আদালতের বিচারক শেখ সাদী রহমান। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের কুমিল্লা জেলার আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনির হোসেন পাটোয়ারী বলেন, এই রায়ের মধ্য দিয়ে সচেতনতা তৈরি হবে। কেউ নারীদের পাওনা দেনমোহর নিয়ে অবহেলা করবে না। বরং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দেনমোহর পরিশোধের সচেতনতা তৈরী হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল–১ এর সরকারি কৌসুলী অ্যাডভোকেট বদিউল আলম সুজন বলেন, এটি অবহেলিত নারী সমাজের জন্য যুগান্তকারী রায় বলে মনে করছি। কারণ, আমাদের মুসলিম রীতিতে বিবাহ বিচ্ছেদের পর দেনমোহর নিয়ে নারীদের অনেক বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার হতে হয়। বিচারক বাস্তবতা উপলব্ধি করে যে রায় দিলেন তা অবশ্যই ব্যতিক্রমী ও যুগান্তকারী।