মুজিববর্ষেই খুলছে ১৭০ মডেল মসজিদের দ্বার

| বৃহস্পতিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ইসলামের প্রচার, প্রসার ও উন্নয়নে দেশব্যাপী যে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে সরকার, তার মধ্যে মুজিববর্ষেই ১৭০টি মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের প্রতিটি জেলা সদর ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. নজিবুর রহমান বলেন, এটাই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম কোনো সরকারের একই সময়ে এত বিপুল সংখ্যক মসজিদ নির্মাণের ঘটনা। ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও মূল্যবোধের প্রচার এবং উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী প্রচার করার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বল জানান তিনি। সরেজমিনে দেশের কয়েকটি জেলা ঘুরে দেখা গেছে, সব জায়গায় এসব মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সিরাজগঞ্জ ও রংপুর জেলা মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় সেখানে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফারুক আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, সিরাজগঞ্জ জেলার মোট ১০টি মসজিদের মধ্যে জেলা মডেল মসজিদ ও একটি উপজেলা মসজিদ নির্মাণ কাজ আগামী মার্চের প্রথমেই শেষ হবে। রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, রংপুর জেলায় যেসব মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে তার কাজ অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। আশা করছি, দ্রুততম সময়ে এই নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
সারা দেশে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক নজিবুর বলেন, আগামী এপ্রিলে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেপ্টেম্বরে ৬০টি এবং মুজিববর্ষের শেষ ভাগে ডিসেম্বর মাসে আরও ৬০টিসহ সর্বমোট ১৭০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে। এই প্রকল্পের মোট কাজের ৩২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫৬০টি মডেল মসজিদের সবগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প নেওয়া হয়।
ইসলামের প্রচার ও প্রসারে ভূমিকা রাখার সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখবে এসব মসজিদ। ৪০ শতাংশ জায়গার উপর তিন ক্যাটাগরিতে এই মসজিদগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলার জন্য তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এ-ক্যাটাগরিতে ৬৪টি জেলা শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি চারতলা মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এই মসজিদগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার।
বি-ক্যাটাগরিতে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার।
সি-ক্যাটাগরিতে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এগুলোর প্রতি ফ্লোরের আয়তন ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে নিচতলা ফাঁকা থাকবে। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন এসব মসজিদ নির্মাণে প্রতিটির বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। সারা দেশে নির্মাণাধীন এসব মসজিদের ভৌত অবকাঠামো গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক নজিবুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলংগদুতে কাপ্তাই লেকে ডুবে শিশুর মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধবোয়ালখালীতে পুত্রবধূ ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুর গ্রেপ্তার