চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় আবারো উঠে এলেন কামরুল সিকদার ওরফে মুসা। মিতু কিলিং মিশনের নেতৃত্বে যে মুসাই ছিল তার তথ্য প্রমাণ ইতোমধ্যে পিবিআইয়ের হাতে এসেছে কিন্তু মিতু হত্যার ঘটনার পর থেকে মুসা কোথায় গায়েব হলো সেই সম্পর্কে সঠিক কিছু জানাতে পারছে না মুসার পরিবার কিংবা পুলিশ।
মুসার স্ত্রী পান্না বার বার বলছেন, তার স্বামীকে পুলিশ নিয়ে গেছে ঘর থেকেই। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।
এদিকে, পুলিশ বলছে, মুসার খোঁজে অভিযান চলছে। নানা নাটকীয়তার পর বাবুল গ্রেপ্তার হয়েছে।
এখন প্রশ্ন বাবুল আক্তার মুসাকে যেহেতু সুপারি দিয়েছিল মিতুকে সরিয়ে দেওয়ার, কাজেই তাকে পাওয়া গেলে অনেক রহস্যের সমাধান হয়ে যাবে কিন্তু মুসাকে আদৌ পাওয়া যাবে তো? মিতু হত্যা রহস্যের মতো গত পাঁচ বছরেও মীমাংসা হয়নি মুসার অন্তর্ধান রহস্য।
মুসার বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায়। বাকলিয়ার মিয়াখান নগরে থাকতেন তিনি। বাবুল আক্তার পুলিশে কর্মরত থাকাকালীন বর্তমানে সিএমপিতে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে বাবুল আক্তারের সাথে মুসার পরিচয়। পরে তার সোর্স হিসেবে কাজ করতেন মুসা। দু’জনের মধ্যে সখ্যতা এতটাই বেশি ছিল যে অনেক সময় বাবুল আক্তারের ঘরের বাজারও করে দিতেন এই মুসা।
মিতু কিলিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ২০১৬ সালের ৫ জুন মিতুকে হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি চালাচ্ছিলেন মুসা। এছাড়া, ঘটনার কয়েক মিনিট পর মুসার সাথে বাবুলের ৩৫ সেকেন্ডের একটি ফোন রেকর্ডও পায় পুলিশ যেখানে খুনের সময় ‘বাড়াবাড়ি’ করার বিষয়ে রীতিমতো মুসাকে শাসাচ্ছিলেন বাবুল আক্তার।
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই মুসার অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে তার স্ত্রী পান্না আক্তার রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে জানান, তাকে পুলিশই তুলে নিয়ে গেছে কিন্তু পুলিশ বার বার বলেছে মুসা তাদের কাছে নেই। তাকে খোঁজা হচ্ছে।
বাবুল আক্তার গতকাল বুধবার (১২ মে) গ্রেপ্তার হওয়ার পর মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার তার স্বামীর ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, “আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, পুলিশ মুসাকে নিয়ে গেছে। অস্বীকার করছে কেন, সেটা তারাই বলুক।” মুসাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় কোন কোন পুলিশ অফিসার ছিলেন, তাদের নামও জানিয়েছেন পান্না।
তিনি বলেন, “মুসা যদি দেশেই থাকে তবে তাকে খুঁজে পেতে এত সময় লাগছে কেন পুলিশের? আর বিদেশে চলে গেলে তার পাসপোর্ট কোথায়? সেটাতো আমার কাছে। দেশে থাকুক বা বিদেশে সে কি এতদিনে তার সন্তানদের কোনো খোঁজ করতো না?” পান্নার আকুতি, মুসা দোষী হলে তাকে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেওয়া হোক। আর যদি অন্য কিছু হয়, তাও জানানো হোক।
পান্না আক্তার আজাদীকে জানান, মুসাকে যখন পুলিশ খুঁজছিল তখন জানতে চাইলে এড়িয়ে যেত সে কিন্তু একদিন বাবুল আক্তার মুসাকে ফোন করে। পান্না তখন সেখানেই ছিলেন।
পান্না বলেন, “ওপাশের কথাতো শুনছিলাম না। তবে মুসা বলছিল, আমার পরিবারের কিছু হলে আমি মুখ খুলবো, স্যার।” পান্নার প্রশ্ন, মুখ বন্ধ করতেই কি তবে মুসাকে সরিয়ে দেওয়া হলো?