মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের পাঁচ দফা দাবি

‘আন্দোলনকারীরা কোটাকে ইস্যু হিসেবে নিয়েছে, মূলত তাদের দাবি অন্যকিছু’

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ জুলাই, ২০২৪ at ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

কোটাকে ইস্যু করে বঙ্গবন্ধু, মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়ে কটূক্তিকারিদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে গনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। সংগঠনের চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল বিকেল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবএর সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। কোটাকে ইস্যু করে ‘জাতির পিতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরুদ্ধে কটাক্ষ, অবমাননা, অপমান ও দেশব্যাপী নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, আন্দোলকারীরা কোটাকে কেবল ইস্যু হিসেবে নিয়েছে। মূলত তাদের দাবি অন্যকিছু। স্বাধীনতা মেনে নেয়নি এমন শক্তি কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্যে রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম মহানগর শাখার আহবায়ক সাহেদ মুরাদ সাকু’র সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম আহবায়ক মিজানুর রহমান সজিব ও জেলা শাখার সদস্য সচিব কামরুল হুদা পাভেলর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা কমান্ডার ডা. মাহফুজুর রহমান।

সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক রাসেল। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছেঅতিসত্বর সুরক্ষা আইনের আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সাংবাধানিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করা। পিএসসির মাধ্যমে ১৯৭২ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কত জন বীর মুক্তিযোদ্ধা চাকুরি পেয়েছেন এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কতজন সন্তানের চাকুরি হয়েছে কোটার মাধ্যমে অনতিবিলম্বে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। রাজাকারের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে প্রত্যেক ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলায় টাঙ্গিয়ে দেয়া এবং ঘৃণা স্তম্ভ তৈরি করা। রাজাকার পরিবারের সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা, রাজাকারের পরিবারের সকল সদস্যকে চাকুরিচ্যুৎ করা এবং ভবিষ্যতে কোনো রাজাকারের প্রজন্ম যাতে দেশের কোনো ধরনের নেতৃত্বে আসতে না পারে এবং সরকারি চাকুরিতে যোগদানি করতে না পারে আইন করে তা নিশ্চিত করা।

মাহফুজুর রহমান বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলন যে কেউ করতে পারবেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কোটার নামে মহান মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে ছাত্ররা যা ইচ্ছে তা বলবে, তা হয় না। আমরা এখনো বেঁচে আছি। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন, তা মেনে নেব না।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদের যে বক্তব্য দেখলাম, তাতে মনে হচ্ছে, এমন একটা শক্তি তাদের মধ্যে আছে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এখনো মেনে নেয়নি। যারা মেনে নেয়নি, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা না থাকলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে আজ এদেশের মানুষকে পাকিস্তানিদের টয়লেট পরিষ্কার করতে হতো। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সন্তানরা পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেনবাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর এর ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল হক চৌধুরী সৈয়দ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আব্দুর রাজ্জাক, ডা. শাহ আলম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের চেয়ারম্যান জসিমউদ্দিন চৌধুরী, নওশাদ মাহমুদ রানা, নাজিম উদ্দীন, হাবিবুর রহমান তারেক, মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ, আশিকুন্নবী চৌধুরী, সরওয়ার আলম চৌধুরী মনি, চবি শিক্ষক ড. কাজিম নূর সোহাদ, মশিউজ্জামান সিদ্দিকী পাভেল, কাজী রাজিশ ইমরান, যুগ্ন আহবায়ক মিজানুর রহমান সজীব, মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, রিপন চৌধুরী, সৈয়দ মাঈনুল আলম সৌরভ, ইশতিয়াক আহমেদ রুমি, জয়নুদ্দিন আহমেদ জয়, নঈম হাসান লিংকন, বিবি গুল জান্নাত, আশরাফুল হক চৌধুরী, সুচিত্রা গুহ টুম্পা, জানাইন আহমেদ, শেখ ফরিদ মিঠু, মো. রিপন, ফয়সাল জামিল সাকি, নুরুল হুদা চৌধুরী, আবু বক্কর সিদ্দিকী ইবনু, মোসলেহ উদ্দিন কাওসার, রিফাত উদ্দিন বাবু, শহিদুল্লাহ কায়সার, ইরফান কাদেরী, মো. সেকান্দর হোসেন, রাকিব শাহ, তৌরাত রাফি, শরিফুল ইসলাম নোবেল, জিয়াবুল হক, মো রমজান হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনয় কোটি ঋণ বকেয়া, মহিলা লীগ নেত্রী বেবি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধইউনূসের মামলা ‘শ্রম আইন অপব্যবহারের’ উদাহরণ হতে পারে : যুক্তরাষ্ট্র