মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কী কাজ আমি সেটাই বুঝি না। তারা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই ছাড়া আর কিছুই করছে না। আমি এই মন্ত্রণালয়ের একজন কাউন্সিলর হিসেবে ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আমি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির একজন কাউন্সিলর। তারা আমার কথা শুনে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ৫৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ক্ষোভের কথা বলেন। যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের যাচাই-বাছাই করতে হয় না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোশাররফ বলেন, প্রকৃত যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদের তো যাচাই-বাছাই করার কিছুই নেই। যেমন আমি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। আমি ১ নং সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা ভারতীয় লাল মুক্তিবার্তায় আছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরযুক্ত মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট আছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে অধিকতর সম্মানিত করেছে। আজকে জেলা পরিষদ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধিত করায় আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দিত ও উদ্বেলিত। যেটি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের করার কথা সেই কাজটি এম এ সালামের নেতৃত্বে চট্টগাম জেলা পরিষদ করেছে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণ পৃথিবীর ইতিহাসে একটি শ্রেষ্ঠ ভাষণ। মুক্তিযুদ্ধের স্থানগুলো মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে সংরক্ষণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্থানগুলো সংরক্ষণ করা জরুরি। এতে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্ক জানতে পারবে। আজকে আমরা ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করি। আসল স্বাধীনতা দিবস ৭ই মার্চ। কারণ ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেছেন।
মেজর জিয়া স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম জিয়াও ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন। কারণ তার মন্ত্রিসভায় স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াত ছিল। তারা ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অনেক সম্পদ দিয়ে গেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মন্ত্রী এগুলো লুটপাট করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তারা কিছুই করেননি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপ-সচিব) শাব্বির ইকবাল।
মুক্তিযোদ্ধাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে এম এ সালাম বলেন, অনেকেই মন্ত্রী হন, এমপি হন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী তৈরি না হলে কখনো মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না।
জেলা পরিষদের সচিব মো. রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক গণপরিষদ সদস্য মির্জা আবু মনসুর, যুদ্ধকালীন বিএলএফ কমান্ডার অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক চৌধুরী, মো. ইউনুস প্রমুখ।