মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রণয়নে নির্মোহ গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামবাসী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের রয়েছে বর্ণিল অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি। তবে, আজো এ দুটি বিষয়ের উপর পূর্ণাঙ্গ গবেষণা হয়নি। এই ইতিহাস তুলে আনতে প্রয়োজন নির্মোহ গবেষণা। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহ্উদ্দিন মো. রেজার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক। মেয়র বলেন, প্রকৃত গুণীরা পদকের জন্য কাজ করেন না। তাদের একাগ্রতার মধ্য দিয়ে একদিন স্বীকৃতি অর্জিত হয়। গবেষকরা হারিয়ে যাওয়া বিষয়কে জাগিয়ে তুলেন। তাদের কাজ ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখে। নানা প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে তারা তাদের সাধনায় নিয়োজিত থাকেন। পরবর্তী প্রজন্মকে পথ দেখান। ‘ইতিহাস চর্চা একটা দুরূহ কাজ। অথচ সাংবাদিক শামসুল হক দীর্ঘদিন ধরে সাহসিকতার সাথে এই কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। নানা পরিস্থিতির মধ্যেও তিনি নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করায় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি পদকে ভূষিত হয়েছেন। তার গবেষণাকে আরো তরাণ্বিত করতে আমার সহযোগিতা থাকবে।’ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ–সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, কার্যকরী সদস্য জসীম চৌধুরী সবুজ, স্থায়ী সদস্য ওমর কায়সার এবং কামরুল হাসান বাদল।
সভাপতির বক্তব্যে সালাহ্উদ্দিন মো. রেজা বলেন, মুহাম্মদ শামসুল হকের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি সাংবাদিক সমাজ ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জন্য গৌরবের। তার কর্মের মাধ্যমে তিনি ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। তার সাংবাদিকতা ও গবেষণা অন্যান্যদের প্রেরণা জোগাবে। সংবর্ধনার জবাবে মুহাম্মদ শামসুল হক বলেন, পাকিস্তানের শোষণ ও মুক্তিযুদ্ধে তাদের নির্মমতা এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ইতিহাস বিকৃতি আমাকে গবেষণাকর্মে উজ্জীবিত করেছে। সাংবাদিকতা পেশায় এসে এই কাজে আরো বেশি মনোযোগী হয়েছি। আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারের আমলে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা নিয়ে গবেষণামূলক বিভিন্ন প্রকাশনা বের করেছি। কিন্তু তা নিয়ে এই পর্যন্ত বিতর্কের সুযোগ হয়নি। নানা টানাপোড়েনের মধ্যেও এই দুরূহ কাজ থেকে বিচ্যুত হইনি। আনুষ্ঠানিকভাবে আমাকে সংবর্ধিত করায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, ক্রীড়া সম্পাদক এম সরওয়ারুল আলম সোহেল, গ্রন্থাগার সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক আল রাহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খোরশেদুল আলম শামীম, কার্যকরী সদস্য মো. আইয়ুব আলী, স্থায়ী সদস্য স ম ইব্রাহীম, আফজল রহিম সিদ্দিকী প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।