নগরীর ইপিজেড এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী শিশু আলীনা ইসলাম আয়াত খুনে জড়িত আবীর আলী দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। জবানবন্দিতে বলেছে, আয়াতকে অপহরণ করে দাদার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় এবং মুক্তিপণের টাকা দিয়ে তিনটি সিএনজি টেক্সি কিনে দ্রুত ধনী হওয়াটাই ছিল তার লক্ষ্য।
গতকাল চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আবীর আলী স্বেচ্ছায় এ জবানবন্দি দেয়।
আদালতে থাকা নগর পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন শাখার (নারী শিশু) এসআই মো. জাফর আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সাত দিনের রিমান্ড শেষে হাজির করা হলে আবীর আলী দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এর আগে গত ২৮ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় পুলিশের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। তার আগে ২৬ নভেম্বর প্রথম দফায় তাকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্র জানায়, আয়াত হত্যাকাণ্ডে আবীর আলীর পাশাপাশি তার বাবা-মা ও বোনকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে গত কয়েক দিনের অভিযানে শিশু আয়াতের খণ্ডিত তিনটি অংশ সমুদ্র থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে গত ১৫ নভেম্বর শিশু আয়াতকে অপহরণ করে নয়ারহাটে বাবার বাসায় নিয়ে যায় আবীর আলী। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে মায়ের সেলাই মেশিন বিক্রি করে ৩০০ টাকায় একটি মোবাইল ফোন কিনে। আগে থেকে সংগ্রহে ছিল একটি বাংলালিংক সিম। কিন্তু সিমটি কাজ না করায় আবীর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
কোনো উপায় খুঁজে না পেয়ে আয়াতকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে বাবার বাসায় শ্বাসরোধ করে আয়াতকে খুন করা হয়। সেখান থেকে পকেটবাজারে মায়ের বাসায় নিয়ে যায় লাশ। সেখানে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে বঁটি ও ধারালো ছুরি দিয়ে আয়াতকে ছয় টুকরা করে প্যাকেট করা হয়। আউটার রিং রোড ও আকমল আলী রোড এলাকাধীন সাগরে দুই দফায় লাশের অংশগুলো ফেলা হয়।
রিকশা করে প্যাকেটভর্তি লাশের টুকরো ফেলে দিতে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। আবীরকে গ্রেপ্তার করলে সে খুনের দায় স্বীকার করে।