মীরসরাই-সিটি গেট মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটারে শতাধিক অবৈধ বিলবোর্ড

মীরসরাই প্রতিনিধি | সোমবার , ১১ এপ্রিল, ২০২২ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার উত্তরের ধুমঘাট সেতু থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার জুড়ে এখনো শতাধিক অবৈধ বিলবোর্ড রয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয় না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই পাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিনে দিনে ঢাকা পড়ছে ‘অবৈধ’ বিলবোর্ডে। সড়ক ও সেতুমন্ত্রীর ঘোষণার পরও তা অপসারণ বা উচ্ছেদ হয়নি। পৌরসভা, সড়ক ও জনপদের (সওজ) জায়গা দখল করে দিব্যি দাঁড়িয়ে আছে বিলবোর্ডগুলো।
মহাসড়কে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার উত্তরের ধুমঘাট সেতু থেকে দক্ষিণের বড় দারোগারহাট (উত্তর বাজার) পর্যন্ত দুই ধারেও রয়েছে অর্ধশতাধিক বিলবোর্ড।
সীতাকুণ্ডের বড় দারোগারহাট (দক্ষিণ বাজার) থেকে চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত মোট ৪০টি বিলবোর্ড রয়েছে। এই ৯৪টি বিলবোর্ডের মধ্যে খুব অল্পসংখক বৈধ। বাকি সিংগভাগই অবৈধ, যা বিভিন্ন অসাধু বিজ্ঞাপনী সংস্থার মালিকরা সওজ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে স্থাপন করেছেন। সরেজমিনে মীরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট পৌরসভা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে ছোট-বড় ১৫টি বিলবোর্ড রয়েছে, যার অধিকাংশই মহাসড়কের পাশে। পৌর বাজারের ট্রাফিক মোড়ের পূর্ব পাশে দেখা যায় একটি বিপণি বিতানের ছাদ ও দেয়াল দখল করে বড় বড় দুটি বিলবোর্ড স্থাপন করেছে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থা। এতে বিপণি বিতানের দোকান মালিকরা বেশ ক্ষুব্ধ।
বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকন বলেন, ‘আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করেছি মাত্র অল্প কদিন হলো। শীঘ্রই এই বিষয়ে অভিযান পরিচালিত হবে।’ বারইয়ারহাট পৌর এলাকা পার হয়ে মহাসড়কের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাপাহাড় থেকে মীরসরাই সদর ইউনিয়নের মিঠাছড়া বাজার পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বিশাল আকারের অন্তত ১০টি বিলবোর্ড রয়েছে, যার সব কটি দখল করা হয়েছে সওজের জায়গা। মিঠাছড়া থেকে মীরসরাই ও বড়তাকিয়া এলাকায় ও রয়েছে অন্তত ১০টি অবৈধ বিলর্বোড। যা স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবনের ছাদে এবং মহাসড়কের পাশের কৃষিজমিতে। এ বিষয়ে মীরসরাই পৌরসভার মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, অনেকেই আমাদের ফাঁকি দিয়ে, কর ফাঁকি দিয়ে বিলবোর্ডগুলো স্থাপন করেছে। শীঘ্রই প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে এই বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।’ নয়দুয়ারীয়া, হাদিফকিরহাট, নিজামপুর, ডাকঘর, ছোটকমলদহ ও বড় দারোগারহাট এলাকায় ছোট-বড় মিলে আরো ১৫ থেকে ২০টি বিলবোর্ড রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি সওজের জমিতে স্থাপন করা হয়েছে। বাকিগুলো বাজারের বিভিন্ন বাণিজ্যিক-আবাসিক ভবনের ছাদ ও কৃষিজমিতে।
এভাবেই চট্টগ্রাম সিটি গেট পর্যন্ত রয়েছে আরো অর্ধশত বিলবোর্ড। স্থানীয়রা জানায়, চট্টগ্রাম নগরীতে বিলবোর্ড উচ্ছেদ শুরু হওয়ার পর থেকে মহাসড়কে বিলবোর্ড স্থাপন বেড়ে যায়। যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে মহাসড়কের বাঁকে বাঁকে এমনভাবে বিলবোর্ডগুলো স্থাপন করা হয়েছে, যাতে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিও বেড়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে সওজ বা পৌরসভা অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ বিভিন্ন সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক-মহাসড়কের পাশ থেকে বিলবোর্ড, অপ্রয়োজনীয় সাইনবোর্ড ও বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম উচ্ছেদের ঘোষণা দেন। তিনি নিজেও অনেক স্থানে অভিযান শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে তা থেমে যায়। এ বিষয়ে সওজ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘অবৈধ বিলবোর্ডের বিষয়ে অভিযান হয়েছিল, কিন্তু তারা আবারো স্থাপন করেছে। আমরা আবারো নতুন করে মাঠে নামবো।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাহে রমজানের সওগাত
পরবর্তী নিবন্ধএক বছর ধরে বাক্সবন্দি সোয়া দুই কোটি টাকার মেশিন