আমনে বেশ ভাল ফলন হলেও একদিকে ধানের হাটে ধানের দাম নিম্নমুখি। আবার অনেক কৃষক ধানে লাভ কম হলেও খড় বিক্রি করে কিছুটা পুষিয়ে নিয়েছে চলতি বছরই। এবার খড়ের দামও কমে যাওয়ায় হতাশা দানা বেঁধেছে।
উপজেলার সকল গ্রামেই ঘরে ঘরে এখন আমন ধান। হাট বাজারগুলোতে যেমন ধানের দাম কৃষকের জন্য প্রত্যাশিত নয় তেমনি এবার খড়ের দামও অর্ধেকে নেমে গেছে। পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, গত বছর দেড় কানি জমির খড় বিক্রি করেছি ২৫ হাজার টাকা। এবার সেই খড় মাত্র ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। গত বছর ফলন কিছু কম হলেও পুষিয়ে গেছে খড়ে। এবার ভাল ফলন হয়েও লাভবান হলাম না। সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্ব খৈয়াছরা মাঠে অনেকে কম দাম বলে খড় এখনো মাঠেই রেখে দিয়েছে।
এবার উৎপাদিত আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯২ হাজার ৩২৫ মেট্টিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৯২ হাজার ৪৪০ মেট্টিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭৫ মেট্রিক টন বেশি। চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬০ হাজার ৭০০ মেট্টিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৬০ হাজার ৮০০ মেট্টিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০০ মেট্টিক টন বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মীরসরাই সদর, মিঠানালা, মঘাদিয়া, খৈয়াছড়া, মায়ানী, হাইতকান্দি, ওয়াহেদপুর ও সাহেরখালী ইউনিয়নে আমনের আবাদ করা হয়। সবচেয়ে বেশি ইছাখালী ইউনিয়নে ৯৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা প্রতি মণ চিকন ধান বিক্রি করছেন ১৪০০ টাকা। মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ১২৮০ থেকে ১৩০০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি কেজি চিকন ধান ৪৯–জাতের দাম পড়েছে ৩৫ টাকা। মোটা ধান প্রতি কেজি দাম পড়েছে ৩০–৩২ টাকা। বড় বড় পাইকারেরা এখান থেকে ধান কিনে দেশের বিভিন্ন শহরে নিয়ে যান। আবার অনেক পাইকার কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনে থাকেন। কিন্তু কৃষকদের মুখে নেই হাসি। খরচ পোষাতে অনেকটা যেন বেসামাল । তার উপর খড়ের দাম ও কম এবার।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার আমন চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। উপজেলাজুড়ে ১৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের, ২০০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১০৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ১০০ মেট্টিক টন ধান বেশি উৎপাদন হয়েছে। চাল উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৭৭ মেট্রিক টন বেশি। তবে বাজার দরের বিষয়ে কৃষি বিভাগ বলেন আশা করা যাচ্ছে সরকার কৃষকদের জন্য ভূর্তুকি দিয়ে হলে ও দাম ভাল রাখার চেষ্টা করবে। ধান চাল সংগ্রহ শুরু হবে শীঘ্রই আর এই বিষয়ে আবশ্যই কৃষকদের বিষয়টি বিবেচনার জন্য আমরা ও উপস্থাপন করবো।












