মীরসরাইয়ে স্বামীর নির্যাতনে এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত নারীর নাম সাহেলা আক্তার (৩৮)। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোটবাড়িয়া গ্রামের দিদারুল আলমের স্ত্রী। গত বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে সাহেলার ভাই শাহ মো. মোজাম্মেল বাদী হয়ে দিদারুলকে আসামি করে মীরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত সাহেলা তিন সন্তানের জননী। তার স্বামী দিদারুল পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। মো. মোজাম্মেল জানান, ২১ বছর আগে তার বোন সাহেলা আক্তারের সঙ্গে দিদারুলের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে দিদার তার বোনকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। একাধিকবার এসব বিষয় সামাজিকভাবে মীমাংসা করা হয়। সর্বশেষ ৬ মে তার বোন সাহেলা আক্তারকে শারীরিক নির্যাতনের একপর্যায়ে ঘাড়ে আঘাত করে দিদারুল। খবর পেয়ে বোনকে উদ্ধার করে মীরসরাই সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে আবারও স্বামীর বাড়িতে ফিরে যান সাহেলা। পরের দিন আবারও ঝগড়ার একপর্যায়ে একই স্থানে আঘাত করে দিদার। এতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সাহেলা।মো. মোজাম্মেল বলেন, গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও আমার বোনকে তার স্বামী হাসপাতালে নিয়ে যায়নি। খবর পেয়ে বোনকে মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসক অবস্থা গুরুতর দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। গত বুধবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বোন মারা যায়। আরেকটি বিয়ে করতে চেয়েছিল দিদারুল। তাই আমার বোনকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে বারবার নির্যাতন করেছে। শুধু তিন মেয়ের দিকে তাকিয়ে বোনটি মাটি কামড়ে স্বামীর ভিটায় পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচাতে পারলাম না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। অভিযুক্ত দিদারুল ইসলাম ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাই ঘটনার বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগে মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ওই নারীকে মারধরের সত্যতা মিলেছে। তবে আসামি দিদারুল আলম পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।