ছুটির ঘণ্টা বাজানো প্রিয় মুখ আবছার ভাইকে আর দেখা যাবে না জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। ৪ দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন ব্যাচের সকলের প্রিয় দপ্তরি আবছার পেয়েছেন রাজকীয় বিদায়। গত রোববার সকালে বিদ্যালয়ে সংবর্ধনার পর তাকে ঘোড়ার গাড়িতে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।
স্থানীয় ও বিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় ৫ দশকের কর্মজীবন শেষে নুরুল আবছার এ প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে গেলেন। একজন কর্মচারীর বিদায় অনুষ্ঠান রাজকীয় হয়ে উঠল বিদ্যালয় সংস্লিষ্ট সকলের মায়া, মমতা, ভালোবাসা আর আন্তরিকতায়। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক নিতাই দাশের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক সাইফুল আলম, আছিউর রহমান, রেজাউল করিম, তারেক নিজামী, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য আবু সুফিয়ান চৌধুরী, শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, মারিয়া আক্তার, কাজী জান্নাতুল ফেরদৌস হাবিবা, মেহেদী হাসান, তাহসিনা তাবাচ্ছুম তানিশা, বিবি ফাতেমা ও ওবায়দুল ইসলাম চৌধুরী। এ সময় নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন নুরুল আবছারও। তিনি তার বক্তব্যে এমন আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সংবর্ধনা শেষে বর সেজে ঘোড়ার গাড়িতে করে প্রিয় শিক্ষাঙ্গন থেকে বিদায় নেন নুরুল আবছার। স্কাউট দলের সদস্যরা বাদ্যের তালে তালে এবং বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী সারিবদ্ধভাবে তাকে জোরারগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে বাড়ি পৌঁছে দেন। নুরুল আবছার বলেন, ১৬০ টাকা বেতনে এই স্কুলে চাকরি শুরু করি। এরপর একপর্যায়ে ৩ মাসে মিলে সরকারিভাবে ৩৬০ টাকা বেতন পেতাম। আজ আমার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৪ প্রজন্মের কর্মচারী হিসেবে চাকরি জীবনের সমাপ্তি হল। চাকরি জীবনে অনেক শিক্ষক–কর্মচারী এ স্কুলে চাকরি করেছেন। আমাকে যেভাবে বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছে সেটি আমি আগে কখনো দেখিনি। আমি বর্তমান প্রধান শিক্ষক সাইফুল আলমসহ সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, আমাদের স্কুলের সবার প্রিয় নুরুল আবছার ভাই তার জীবনের বেশিরভাগ সময় এ স্কুলের জন্য দিয়ে গেছেন। তিনি সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ স্কুলের প্রতিটি ধূলিকণা নুরুল আবছারের অবদানকে স্মরণ করবে।