মীরসরাইয়ে কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম ইউসুফের বাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার নয়দুয়ারিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই নেতার বাড়ির সামনে বিএনপির কর্মীরা জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের বাড়িতে বিএনপি নেতা কেন? প্রসঙ্গত, এলিট ইউসুফের পুত্র।
স্লোগান দেওয়া বিএনপির কর্মীদের অভিযোগ, মনিরুল ইসলাম ইউসুফ বিএনপি নেতা হলেও এই বাড়িতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সমাগম ছিল। এই বাড়িতে কেন বিএনপির নেতারা দাওয়াত খেতে এলেন? স্লোগান দেওয়ার পর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের অনুসারীরা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে কথা বলতে গেলে সেখানে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে উপজেলার সেনাক্যাম্পে খবর দেওয়া হয়। ক্যাম্প থেকে একটি টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ উত্তর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ সেখান থেকে বেরিয়ে ঢাকার পথে চলে যান।
উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন বলেন, আমরা গোলাম আকবর খোন্দকারসহ সড়ক পথে ঢাকা যাচ্ছিলাম। যাওয়ার পথে মীরসরাই পৌরসভার প্রয়াত বিএনপি নেতা ফকির আহমদের কবর জেয়ারতের সিডিউল ছিল। উক্ত প্রোগ্রাম জেনে মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতা মনিরুল ইসলাম ইফসুফ যাওয়ার পথে তাদের বাড়িতে দুপুরের খাবারের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বিএনপির প্রবীণ নেতা। এই বাড়িতে বিএনপির হান্নান শাহ, আসলাম চৌধুরীসহ অনেক কেন্দ্রীয় নেতা এসেছিলেন। আমরাও দাওয়াত খেতে গিয়েছি। খাওয়ার সময় বাইরে হট্টগোল শুনতে পাই। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ইউসুফের পুত্র এলিট ভিন্ন রাজনৈতিক দল করলেও এই বাড়িটি তো তার বাবার। আমরা আমাদের দলের নেতার বাড়িতেই এসেছি।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম বলেন, আমরা জেনেছি, এখানে যুবলীগ নেতার বাড়িতে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী আমাদের নেতাকে অবরুদ্ধ করেছেন। তাই আমরা নেতাকে উদ্ধার করতে এসেছি। কিন্তু নেতাকে আমরাই আটক করেছি এবং অস্ত্র নিয়ে এসেছি বলে অভিযোগ করা হয়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে।
আর অভিযোগ অস্বীকার করে গাজী নিজামের মতো একই বক্তব্য প্রদান করেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।
বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, এ সময় গোলাম আকবর খোন্দকারকে প্রায় ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরীর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী উক্ত ঘটনার জন্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে দায়ী করেছেন। তিনি গোলাম আকবর খোন্দকারের প্রতি কিছু নেতাকর্র্মীর এমন অশোভন আচরণের নিন্দা জানান।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম ইউসুফ বলেন, ছেলে ভিন্ন দল করলেও এই বাড়ি আমার। কিছু ঈর্ষান্বিত মহল হিংসার বশবর্তী হয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। কেন্দ্রীয় বিএনপির অনেক নেতা আমার বাড়িতে এসেছিলেন। কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। আমি লজ্জিত।