মীরসরাইয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১৫

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২৪ at ৫:১৬ পূর্বাহ্ণ

মীরসরাই উপজেলার নিজামপুরে ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের নিজামপুর কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় ৮ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের পর থেকে আতঙ্কে নিজামপুর বাজারের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে মীরসরাই থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, নিজামপুর কলেজ কেন্দ্রীক রাজনীতির সাথে সরকারবাড়ি আর চামরাশি মুহুরী বাড়ির আধিপত্য নিয়ে বিবাদ দীর্ঘ অনেক বছরের। ক্ষমতার পালাবদলে সেই পুরোনো দিনের উত্তেজনা আবার উথলে উঠেছে। জানা গেছে, স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন সমর্থিত আরমান গ্রুপ ও নুরুল আমিন চেয়ারম্যান সমর্থিত হিমেল গ্রুপের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে এই উত্তেজনার সূত্রপাত। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন যুবদল নেতা আরমান হোসেন (২২), মোহাম্মদ সুমন (৩৪), এমরান হোসেন (২২), মফিজুল ইসলাম (৩৪), শহীদুল্লাহ খানসাব (৬০), রাসেল (৩০), যুবদল কর্মী ইমন (২১), ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম (৩৮), যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন (৩৫), ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান ইমাম (৪৫), ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বেলাল হোসেন (২৬), সদস্য টিটু (৩৫) ও ছাত্রদল নেতা নাহিদ রায়হান চৌধুরী হিমেল (২০)

ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সভাপতি গোলাম রহিম চৌধুরী স্বপন বলেন, বৃহস্পতিবার নিজামপুর বাজারে যুবদল কর্মী আরিফ শ্রমিকদল কর্মী মুরাদকে মারধর করে। এ বিষয়ে শুক্রবার যুবদল কর্মী টিটু আরিফকে জিজ্ঞেস করতে গেলে টিটুকেও আরিফের লোকজন মারধর করে আটকে রাখে। খবর পেয়ে অন্য নেতাকর্মীরা গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। এতে আমাদের ৬ জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

মীরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপি নেতা স্বপনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তার নেতৃত্বে ফরফরিয়া গ্রামের চামরাশি বাড়িতে ঘরে ঢুকে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কুপিয়েছে। মহিলাদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। আরমান নামে এক যুবদল কর্মীর পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় এবং ছেলেকে বাঁচাতে আসলে বাবা খানসাবকেও মারধর করে। আরমানের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। মূলত স্বপন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।

মীরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিন বলেন, বিএনপির গ্রুপিংয়ের কারণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। নিজামপুর এলাকায় ব্যক্তিগত আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটেছে। আহত সবাইকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদা জানান, মারামারির ঘটনায় আহত অবস্থায় ৫ জনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের সবার মাথা, হাত, পেট, কোমরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, নিজামপুর এলাকায় মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধএকটি কলার দাম ৭৪ কোটি টাকা!