মীরসরাই উপজেলায় বিভিন্ন জাতের ডালের ভালো ফলনে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। এখন শুধু ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষা। ইতোমধ্যে অনেকে জমি থেকে ডাল তুলে বাড়িও নিয়ে গেছেন। সম্প্রতি কয়েক বছরে ডালে ভালো লাভ হওয়ায় দিন দিন চাষের পরিধিও বাড়ছে। এক ফসলি জমির ফসল কাটার পর খালি পড়ে থাকে। সেই খালি জমিতে চাষ করা হয় মুগ ডাল। স্থানীয় বাজারগুলোতে ডালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় এবার ৬ হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ডাল আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে মুগ ডাল আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। ফেলন ডাল ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর, খেসারি ৭৫০ হেক্টর, মসুর ১৮ হেক্টর, মটর ডাল ৬ হেক্টর, মাসকলাই ডাল ৩ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নে। সাহেরখালী ইউনিয়নের ডোমখালী এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, চরের জমিগুলোতে ডাল আর ডাল। বাতাসে মুগ ডালের লতাগুলো দুলছে। অনেক কৃষক ডাল তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ডাল তুলছেন।
চরশরত এলাকার কৃষক বিমল চন্দ্র দাশ বলেন, চলতি বছর ৩ একর জমিতে মুগ ডাল চাষ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে বাজারে বিক্রিও করেছি। খরচ উঠে আরো ২০ হাজার টাকা বাড়তি লাভ থাকতে পারে। দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর দুর্গাপুর এলাকার চাষি জানে আলম বলেন, আমি প্রায় ২০ বছর ধরে অন্য ফসলের পাশাপাশি বিভিন্ন ডালের চাষ করে আসছি। প্রতি বছরই ঘরের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে থাকি। এবারো ভালো লাভ হবে বলে আশাবাদী।
উপজেলার বড়দারোগাহাট, আবুতোরাব, মিঠাছরা, আবুরহাট বাজারে মুগ ডালের বড় বাজার বসে। স্থানীয়দের পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহর থেকে পাইকাররা কিনে নিয়ে যান। কৃষকরা জানান, সব ধরনের ডাল লাভজনক। কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়। জমিতে তেমন সেচ দিতে হয় না। তবে মাঝে মাঝে আগাছা ছাঁটাই করতে হয়। তবে ফলন ঘরে তোলার আগে জমিতে বৃষ্টি হানা দিলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জানান, চলতি বছর উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় ৬ হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ডাল চাষ হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই কৃষকরা ডালে আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় বাড়ছে ডালের চাষাবাদ। এখানকার মাটি ডাল চাষের বেশ উপযোগী। তাই দিন দিন চাষের পরিমাণও বাড়ছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হয়।