মীরসরাইয়ে আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে স্থানীয় যুবদলের কর্মীরা আপত্তি জানালে প্রথমে বাকবিতন্ডা হয়। এরপর হাতাহাতি এবং শেষে মারামারিতে রূপ নেয় সমাবেশ। এতে গণমাধ্যমকর্মীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মীরসরাই পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এস রহমান স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় মীরসরাই পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসান বলেন, বিকেলে আমাদের এলাকার এস রহমান স্কুলে জামায়াতের কর্মী সমাবেশের খবর পেয়ে আমাদের কয়েকজন নেতাকর্মী সভাস্থলের আশেপাশে গিয়ে দেখতে পায় পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক দায়িত্বশীলগণের পরিবারের সক্রিয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী নিয়ে জামায়াতের কর্মী সভা হচ্ছে। এতে এলাকার যুবদল নেতাকর্মীরা আপত্তি জানিয়ে হট্টগোল করছিল শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু আমাদের ওপর হামলা করে জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এতে গুরুতর আহত হন অন্তত ১০ নেতাকর্মী। যুবদল কর্মী রিয়াজ (২৬) ও হাসানকে (৩০) চমেক হামপাতালে পাঠানো হয়। আমি সহ ছাত্রদলকর্মী শরীফ (২২) ও রিফাত (২৪) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই।
এদিকে উপজেলা জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি শফিকুল আলম শিকদার বলেন, ‘বিকেলে সাংগঠনিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এস রহমান স্কুল মাঠে একটি কর্মী সমাবেশ চলছিল। এসময় স্থানীয় যুবদলের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা করে। এতে আহতরা হলেন, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আনোয়ারুল্লাহ আলম মামুন (৫৫), দৈনিক ভোরের দর্পণ পত্রিকার মীরসরাই প্রতিনিধি আশরাফ উদ্দিন (৩৯), জামায়াত কর্মী মো. নুরুল আলম (৪০), শহিদুল ইসলাম (৩০), সাইফুল ইসলাম (২৫), কফিল উদ্দিন (২০), নুর উদ্দিন (৩৩), কাজী সামির (২০), তানজিম (১৮), সাব্বির শাহাদাৎ (২০) ও রাহাত হাসান হাসিব (১৮)।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ ও মস্তাননগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে আহত নুরুল আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মীরসরাই থানা জামায়াতের আমীর মো. নুরুল কবির বলেন, সন্ত্রাসীদের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটায় তারা আমাদের কর্মী সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। বিষয়টি সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
মীরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,পৌর এলাকায় জামায়াতের সমাবেশে হামলার ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। এখন আমাদের এই স্বাধীন দেশে যে কোনো দল বা মতাদর্শের মানুষই সভা সমাবেশ স্বাধীনভাবে করতে পারবে। আমরা ফ্যাসিবাদি আচরণ কারো সাথে হলে তা সমর্থন করবো না।
মীরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক জোবায়ের হোসেন তারেক জানান, সন্ধ্যায় মারামারির ঘটনায় বেশ কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। তবে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এই বিষয়ে মীরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দীপ্তেশ রায় বলেন, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জামায়াতের কর্মী সমাবেশে হামলার ঘটনায় সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।