মিয়ানমারে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভে গুলিতে নিহত ৯

আজাদী অনলাইন | বুধবার , ৩ মার্চ, ২০২১ at ৪:০৭ অপরাহ্ণ

মিয়ানমারে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধীদের প্রতিবাদ চলাকালে আজ বুধবার (৩ মার্চ) এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন গণমাধ্যম।
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় প্রতিবেশী দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানানোর একদিন পর আজ
আজ বুধবার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে হতাহতের এসব ঘটনা ঘটল বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিডিনিউজ
দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের একটি প্রতিবাদস্থলে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন বলে একজন প্রত্যক্ষদর্শী ও গণামাধ্যম জানিয়েছে।
বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনে পুলিশের গুলিতে আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ঘটনাস্থলে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।
মোনিওয়া গ্যাজেট জানিয়েছে, মধ্যাঞ্চলীয় এ শহরটিতে পুলিশের গুলিতে পাঁচ জন নিহত হয়েছেন।
মধ্যাঞ্চলের আরেক শহর মায়েনগিয়ানে গুলিবিদ্ধ হয়ে আরেক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে ছাত্রনেতা মোয়ে মিন্ট হেইন (২৫) জানিয়েছেন।
সংঘর্ষে মিন্ট হেইন নিজেও আহত হয়েছেন। তার পায়ে আঘাত লেগেছে।
টেলিফোনে রয়টার্সকে তিনি বলেন, “তারা আমাদের ওপর গুলি করেছে। একজন নিহত হয়েছেন, তার বয়স কম, একজন কিশোর, তার মাথায় গুলি লেগেছে।”
এসব শহরের পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলীয় চিন রাজ্যে, উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে, উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যে, মধ্যাঞ্চলের সাগাইং ও দক্ষিণাঞ্চলের দাউই শহরেও প্রতিবাদ হয়েছে বলে গণমাধ্যম ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
চিন রাজ্যের আন্দোলনকারী সালাই লিয়ান রয়টার্সকে বলেন, “এই দেশের কেউই একনায়কতন্ত্র চায় না, এটি তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।”
ইয়াঙ্গনে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে বলে বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও জানিয়েছে। যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে প্রতিরোধ আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাও আছেন বলে একজন আন্দোলনকারী জানিয়েছেন।
এসব ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের মুখপাত্র ফোন ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মিয়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়ে চললেও অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্স (এএসইএএন) এর সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি সংযম দেখানোর আহ্বান জানালেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও সিঙ্গাপুর সু চি ও অন্যান্য বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়ে গেছে।
অভ্যুত্থানের পর থেকেই সামরিক শাসন বিরোধী গণতন্ত্রপন্থিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। প্রথম দিকে সংযম দেখালেও গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ দমনে সহিংসপন্থা নিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। পুলিশের গুলিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত ৩০ জন প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন।
সহিংসতায় একজন পুলিশও নিহত হয়েছেন বলে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডাকাতির সময় হত্যায় ৪ জনের ফাঁসির রায়
পরবর্তী নিবন্ধপাথর বোঝাই ট্রলার ডুবিরতে নিখোঁজ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার