আরও এক বার মিয়ানমারে ইন্টারনেট বন্ধ করল সেনাবাহিনী। কিন্তু তাতে গণতন্ত্রকামীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়লেও তাদের আন্দোলন থামেনি। উল্টো গতকাল তা আরও বড় আকার নেয়। গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইয়াঙ্গুন ও তার আশপাশের শহরগুলি। ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সমাজমাধ্যমের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দেখা গিয়েছে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। রাস্তায় চলছে সেনার সাঁজোয়া গাড়ি। সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, গত সোমবার ইয়াঙ্গুনের উত্তরে মেকিনা শহরে বিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে গুলিও চলে। সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পথে নামার জন্য ৪০০ জনকে আটক করা হয়েছে। সেনার নির্দেশ উপেক্ষা করে গতকাল ইয়াঙ্গুনের উত্তরে বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রছাত্রী। ধরপাকড় চলছে সাংবাদিকদের উপরেও। এ অবস্থায় মিয়ানমারের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার যাতে কেড়ে না নেয়া হয়, তার জন্য সেনাকে আরও এক বার হুঁশিয়ারি করে দিয়েছে জাতিসংঘ। সেনা যাতে কোনও ভাবেই হিংসার রাস্তা না নেয়, একযোগে সেই আর্জি জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো দেশগুলির প্রতিনিধিরাও। জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিনা শানার বার্জেনার সামরিক জান্তার উপপ্রধানের সঙ্গে কথা বলেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে যেন অবশ্যই পুরোপুরি সম্মান করা হয় এবং বিক্ষোভকারীদের প্রতিহিংসার শিকার যেন না করা হয় তা নিশ্চিত করতে চাপ দেন শানার বার্জেনার। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে তিনি জানান, বিশ্ব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং কঠোর কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো হলে পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।’
চলতি মাসের শুরুতে অভ্যুত্থানের পর সমাজমাধ্যমে গণবিক্ষোভ ঠেকাতে দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল সেনাবাহিনী। প্রবল সমালোচনার জেরে পরে তা চালু করা হয়। কিন্তু গতকাল থেকে পুরো দেশে ইন্টারনেট সেবা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়। স্থানীয় ‘অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার’ গোষ্ঠী বলেছে, ‘নির্বিচারে গ্রেপ্তারসহ অন্যায় তৎপরতার চালানোর জন্য ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’