মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের সঙ্গে চুক্তি?

বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের

| বৃহস্পতিবার , ৩১ জুলাই, ২০২৫ at ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদে আগ্রহী হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। খনিজ সম্পদে চীনের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন এবার নতুন করে মনোনিবেশ করেছে মিয়ানমারের কাচিন অঞ্চলের দিকে। মিয়ানমারের জাতিগত কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে খনিজ সম্পদ নিয়ে চুক্তি করার সম্ভাবনাসহ আরও বেশ কিছু প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন, যা রদবদল ঘটাতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিয়ানমার নীতিতে। খবর বিডিনিউজের। মিয়ানমারের এই কাচিন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে আছে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ভারী বিরল খনিজের মজুত। আর কাচিন অঞ্চলটি সম্প্রতি আছে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) নিয়ন্ত্রণে। ভারী বিরল খনিজ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে এই খনিজ উৎপাদন হয় খুব কমই। ফলে যুক্তরাষ্ট্রকে খনিজ সম্পদটি আমদানির ওপরই নির্ভর করতে হয়। চীনের সঙ্গে কৌশলগত প্রতিযোগিতায় জড়িত যুক্তরাষ্ট্র এখন বিরল এই খনিজের মজুতকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্যমতে, বিশ্বজুড়ে ৯০ শতাংশ বিরল খনিজ সরবরাহ করে চীন। সেক্ষেত্রে চীনের ওপর থেকে খনিজ আমদানিতে নির্ভরতা কমাতে গেলে মিয়ানমারের কাচিন রাজ্যের মতো অঞ্চলই এখন এই খনিজের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। মিয়ানমারের ভারী বিরল খনিজ হাতে পেতে ট্রাম্প প্রশাসন যেসব প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে তার মধ্যে একটি হলো মিয়ানমার জান্তা সরকারকে এড়িয়ে সরাসরি কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে কাজ করা। অথবা আরেকটি বিকল্প হলো মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে একটি বৃহত্তর শান্তিচুক্তিতে পৌঁছানো। একজন মার্কিন ব্যবসায়ী লবিস্ট, মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির সাবেক এক উপদেষ্টা কেআইএর সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় জড়িত কয়েকজন এবং বাইরের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে এসব প্রস্তাব দিয়েছেন। বার্তা সংস্থাকে এমন কথাই জানিয়েছেন বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল চার সূত্র। প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারের খনিজ সম্পদ পেতে গেলে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমার থেকে এই খনিজ সরবরাহের ক্ষেত্রে যেমন বড় বাধা আছে, তেমনি কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে নাখোশ হতে পারে চীন। কারণ কাচিন থেকেই বিরল খনিজ চীনে যায় এবং সেখানে প্রক্রিয়াজাত হয়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র খনিজ সম্পদ হাতে পেতে চাইলে তাদেরকে কাচিন বিদ্রোহীদের সঙ্গে চুক্তি করতে হতে পারে। ২০২১ সালে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির নেতাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার এড়িয়ে চলছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন বিরল খনিজ পেতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবে জড়িত হলে তা হবে দেশটির নীতিতে এক বড় ধরনের মোড় পরিবর্তন। কারণ মিয়ানমারের জান্তা নেতাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ২৩.৪৩ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধযুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতি না হলে ১০ দিনের মধ্যে রাশিয়ার ওপর শুল্ক : ট্রাম্প