চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং ইফতার পার্টিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৬ জন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। এরমধ্যে দুজন গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, খুরশিদ আলম, রাকিব, মুরাদ, সোহেল, হাসান মুরাদ এবং জালাল। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জিয়া মঞ্চ ডবলমুরিং থানা কমিটির উদ্যোগে মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ইফতার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। সেই অনুষ্ঠানে আওয়ামী সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে স্থানীয় বিএনপির খুরশিদসহ অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। এরপর সেটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ইউনিট বিএনপির সভাপতি খুরশিদ আলম। আহত খুরশিদের ভাই মোসলেম মিয়া আজাদীকে বলেন, জিয়া মঞ্চের নামে স্থানীয় কিছু হাইব্রিড বিএনপি, যারা আগে আওয়ামী লীগ করতো তারাই হামলা করেছে। আমার ভাইকে মারার জন্য কিছুদিন যাবত তারা পাঁয়তারা করছিল, আজকে (বৃহস্পতিবার) তারা আমার ভাইকে ছুরি দিয়ে পেটে আঘাত করেছে, কিন্তু ছুরি কোমরে লেগেছে। তিনি বাঁচার জন্য মসজিদে ঢুকলে সেখানেও তাকে আঘাত করে। আমরা আইনগতভাবে বিচারের জন্য থানার শরণাপন্ন হয়েছি। আমরা মামলা করবো। তিনি বলেন, আব্দুস সবুর মিস্ত্রি, সে আগে আওয়ামী লীগ করতো। আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে তার সখ্যতা রয়েছে। সে এখন বিএনপি দাবি করে নিজেকে। তার সাথে আরও রয়েছে, দেলোয়ার হোসেন, মোস্তাক হোসেন বাবলু ও রেজাউল করিম।
আহত রাকিব আজাদীকে বলেন, খুরশিদ ভাইসহ আমরা মিস্ত্রিপাড়া বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। দেলোয়ারের বাড়ি এখানে না, সে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত লোকদের নিয়ে রাজনীতি করে। তারা বিভিন্ন বিতর্কিত কাজ করে বেড়াচ্ছে। আমরা তাদের জানাইছি এগুলো না করতে কিন্তু তারা শুনছে না। ইদানিং দেখছি তারা অতিরিক্ত করছে। এ আয়োজনে আমরা ঠিকভাবে সম্মান পাই নাই। বাইরের লোকদের এনে ইফতার পার্টি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি তোমরা এগুলো কেন করছো? এরপর নামাজ শেষে আসার সময় তারা আমাদের খুরশিদ ভাইয়ের ওপর হামলা করে, সেই খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করতে গেলে আমাদের ওপরও হামলা করা হয়। আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করলেও কোনোমতে প্রাণে বেঁচে গেছি।
জিয়া মঞ্চ ডবলমুরিং থানা কমিটির আহ্বায়ক মো. দেলোয়ার গণমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ৩০০ মানুষের ইফতার সামগ্রী বিতরণ করছিলাম। ইফতার নেওয়ার জন্য মানুষজনও এসেছিল। খুরশিদ, রাকিব, ইউনুস এবং সেলিমরা এসে আমাদের নেত্রীর ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। এরপর আমাদের ছেলেদের ওপর হামলা করেছে। আমাদের ৩শ বিরিয়ানির প্যাকেট রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। তারা হকিস্টিক, লাঠিসোঁটা আর ছুরি নিয়ে আসছিল। আমাদের এলোপাতাড়ি মেরেছে।
এ বিষয়ে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় ইফতার সামগ্রী বিতরণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা হয়েছে। এতে কয়েকজন ছুরিকাহত হয়েছেন। আহতরা এসেছেন থানায়, আমরা কথা বলছি। এ ব্যাপারে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।