সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদাপাথর’ থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। গত বুধবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি চাপা দেওয়া পাথর উদ্ধার করা হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার কলাবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাত ট্রাক পাথর উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ আশিক কবির। খবর বিডিনিউজের।
বিকালে তিনি বলেন, সকাল থেকে শুরু হওয়া অভিযানে প্রায় পাঁচ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। কালিবাড়ি এলাকা থেকে বালু ও মাটির নিচে চাপা অবস্থায় পাথর পাওয়া গেছে। সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর বালু ও মাটির নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, শতাধিক স্থানে লুটের পাথর মাটি চাপা রয়েছে এমন তথ্য রয়েছে। শুধু ক্র্যাশার মিল নয়, বিভিন্ন বাসাবাড়িতে, এমনকি রান্নাঘরের পেছনেও লুকানোর চেষ্টা করছে লুটেরা চক্র।
এর আগে বুধ ও বৃহস্পতিবার জব্দ করা হয়েছে শতাধিক পাথর বোঝাই ট্রাক। উদ্ধার হওয়া পাথর প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে ভোলাগঞ্জের সাদাপাথরে। অভিযান শুরুর পর থেকেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অধিকাংশ ক্র্যাশার মিল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকায় ক্রাশার মিলের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রশাসন। অনেক মিল মালিক ও বালু–পাথর ব্যবসায়ী গা ঢাকা দিয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকেই সিলেটের অন্যান্য পাথর কোয়ারির মত সাদাপাথরেও শুরু হয় ব্যাপক লুটপাট। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়লে দুদকসহ স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। সাদাপাথর হিসেবে পরিচিত ধলাই নদের উৎসমুখে বিপুল পরিমাণ পাথর জমা হয়েছিল। লাগামহীন লুটপাটের কারণে ক্ষত–বিক্ষত হয়েছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এ পর্যটনকেন্দ্র।
দিনের বেলা প্রকাশ্যেই সেই সব পাথর নৌকা করে নিয়ে লুট করা শুরু হয়। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন করা হয়। নদী তীরের বালি খুঁড়েও লুটপাট চলে। এই অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট ভোলাগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর সাত দিনের মধ্যে উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে।