মিরাজের লক্ষ্য বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি শেষ হওয়া পাকিস্তান সফরে সিরিজ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্যাটেবলে সমান দাপট দেখিয়েছেন এই অল রাউন্ডার। শুধু তাই নয় গত এক বছরে ব্যাট হাতে চার ফিফটিতে ৩৮০ রান এবং বল হাতে একবার ৫ উইকেটসহ মোট ২৩ শিকার করেছেন টেস্ট ক্রিকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ। দুটিই বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ। তাই বলাই যায়, গত এক বছরে এই সংস্করণে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার তিনি। তবে দেশের মধ্যে সেরা হয়ে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না মিরাজ। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে অগ্রজ সাকিব আল হাসানের মতো অর্জন করতে চান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের মুকুট। পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে বড় কারিগর মিরাজ। দুই টেস্টেই ব্যাট হাতে খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। বোলিংয়েও দুই ম্যাচে প্রয়োজনের সময় এনে দেন মূল্যবান উইকেট। সব মিলিয়ে দুই ইনিংসে ১৫৫ রান ও বল হাতে ১০ উইকেট নিয়ে তিনিই জিতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। এর আগে ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও হেসেছিল মিরাজের ব্যাট। দ্বিতীয় টেস্টে খেলেছিলেন ৮১ রানের অপরাজিত ইনিংস। ওই সিরিজে বল হাতে তার শিকার ৫ উইকেট।

গত বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জেতা সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৫০ রান। শুধু বোলার পরিচয় থেকে বেরিয়ে ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠার ছাপটা বেশ ভালোভাবেই রাখছেন মিরাজ। গত এক বছরে ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে বেশ সফল তিনি। এই সময়ে দেশের হয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ ৩২৬ রান তার। আর বোলিংয়ে নেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ উইকেট। সব মিলিয়ে নিখুঁত অলরাউন্ডার হিসেবে দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠছেন তিনি। তাই স্বাভাবিকভাবেই আসছে দলের আরেক অলরাউন্ডার সাকিবের প্রসঙ্গ। দীর্ঘ দিন তিন সংস্করণেই আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন সাকিব। এখন তার ক্যারিয়ারের শেষ দিকে ব্যাটেবলে উত্থান ঘটছে মিরাজের। ভারত সফরের আগে প্রস্তুতি শুরু করে গতকাল সোমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই অলরাউন্ডার জানালেন, তার নিজেরও আশা একসময় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হওয়ার। একটা দলে যদি দুজন অলরাউন্ডার খেলে তাহলে দলের জন্য অনেক সুবিধা থাকে। যেহেতু আমার ব্যাটিংটা এখন ভালো হচ্ছে। যদিও শুরুর দিকে আমার ব্যাটিংটা সেভাবে পায়নি দল। আমি বোলার হিসেবে খেলেছি। আর এখন যেহেতু অবদান রাখছি তাই খুব ভালো লাগছে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হতে অনুশীলন করতে হবে, কষ্ট করতে হবে। এটা একদুই বছরে সম্ভব না। লম্বা সময় ধরে ভালো খেলতে হবে। এখন যেভাবে চলছে এটা যদি লম্বা সময় ধরে রাখতে পারি, তাহলে আশা করি একদিন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হতে পারব। পাকিস্তান সফরে ভালো করার পর বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা শুরু হয়েছে। সাকিবের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসছেন মিরাজ। ওই দুই টেস্টে পারফরম্যান্সের বিচারে সাকিবকে বেশ ভালোভাবেই পেছনে ফেলেছেন তিনি। পাকিস্তানে তিন ইনিংসে ৩৮ রানের পাশাপাশি সাকিবের শিকার ৫ উইকেট। শুধু সবশেষ সিরিজই নয়, সামপ্রতিক সময়ে নিজের সেরা ছন্দ থেকে অনেকটাই দূরে সাকিব। আর এই সময়ে মিরাজের পারফরম্যান্স ঠিক বিপরীত। তাই বলা যায় প্রাসঙ্গিকভাবেই শুরু হয়েছে সাকিবের ছায়া থেকে তার বের হওয়ার আলোচনা।

এছাড়া সাকিবের বয়স হয়ে গেছে ৩৭ বছর। ক্যারিয়ারের শেষের অংশটাও হয়তো শুরু হয়ে গেছে তার। মিরাজের বিশ্বাস সাকিবের বিদায়ের পর দলের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তিনি। এখন আমরা দুজনই খেলছি। দুজনই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছি। সবারই একটা পর্যায়ে অবসরে যেতে হয়। সব দলেই কিন্তু এমন আছে যে বদলি ক্রিকেটার আসা। সাকিব ভাই যখন খেলবে না তখন হয়তো আমার দায়িত্বটা আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে দলের জন্য।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাউন্টি ক্রিকেটে সারেতে সাকিবের অভিষেক
পরবর্তী নিবন্ধ‘এমন যদি হত’ নাটক গড়াল ৫০ পর্বে