ওয়ানডেতে ভারতকে হারিয়ে সিরিজ জেতা বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজের প্রথমেই চট্টগ্রামে প্রবল ধাক্কা খায়। লাল বলের ক্রিকেটে ফিরতেই যেন খেই হারিয়েছেন সাকিব-মুশফিকরা। চট্টগ্রাম টেস্টে হেরেছেন ১৮৮ রানের ব্যবধানে। মূলত প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতার পরই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ ছিটকে যায়। তবে ঢাকায় এই ভুল করতে চান না স্বাগতিকরা। আগে ব্যাটিং হোক কিংবা বোলিং যাই হোক প্রথম ইনিংসেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে চান সাকিব আল হাসানরা। আগের ম্যাচের ভুল শুধরে নিয়ে ঢাকা টেস্টে জিততে মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায়। ম্যাচটি গাজী টেলিভিশন ও টি-স্পোর্টস সরাসরি সমপ্রচার করবে। বাংলাদেশের লক্ষ্য জয় হলেও চট্টগ্রামের চেয়ে মিরপুরেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে দলকে। ভারত দলও এ থেকে দূরে নয়। কেননা মিরপুরে উইকেটের রহস্য উন্মোচন করা বেশ কঠিন।
মিরপুরে বরাবরই ব্যাটারদের কঠিন সংগ্রাম করতে হয়। মিরপুরের স্লো উইকেটে পেসারদের আধিপত্য বিস্তার করা খুব কঠিন। এখানে বরাবরই স্পিনারদের আধিপত্য বেশি। এমন উইকেটে অবশ্য ভারতের খেলার অভিজ্ঞতাও কম নয়। তবুও বুধবার মিরপুরে উইকেট দেখে বেশ বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায় ভারতীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। মিরপুরে সফরকারী দলগুলোর বিপক্ষে স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলে থাকে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে স্পিন সহায়ক উইকেট বানিয়ে কতটা সফল হওয়া যাবে সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ বলেন, ‘ধারণা করে বলতে পারি তিনজন স্পিনার যারা খেলেছিল এবং তাসকিন ফিরে এসেছে, সঙ্গে খালেদ তো আছে। নির্বাচন নিয়ে কাজটা নির্বাচকদের। তবে আমি দেখতে পাচ্ছি এমন কিছুই হতে যাচ্ছে।’ তবে উইকেট নিয়ে না ভেবে প্রক্রিয়া ঠিক রেখে ঢাকায় জিততে মরিয়া বাংলাদেশ।
এদিকে চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতেও ফলের আশায় রয়েছে ভারত। বিক্রম রাঠোর বলেছেন, ‘উইকেট যেমনই হোক, আমরা খেলবো এবং জিতবো। এই উইকেট, ওয়ানডেতেও দেখেছি বোলারদের সাহায্য করেছে। আমি নিশ্চিত এই ম্যাচেও ফল পাওয়া যাবে। ম্যাচটা খেলতে এবং জিততে মুখিয়ে আছি।’ চট্টগ্রামে টেস্টে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ছিল বলতে হেলে হতাশাজনক। অভিষিক্ত জাকির হাসান ছাড়া কোনও ব্যাটারই টেস্টসুলভ ব্যাটিং করতে পারেননি। মুশফিকুর রহিম, ইয়াসির আলী চৌধুরী, লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান হয়েছেন ব্যর্থ। বোলিংয়ের ক্ষেত্রে এবার কিছুটা স্বস্তির খবর আছে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে।
সাকিব পুরোপুরি ফিট আছেন, ঢাকা টেস্টে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব বিভাগেই সাকিবের সার্ভিস পাওয়া যাবে। এদিকে ইনজুরি আক্রান্ত এবাদত ছিটকে গেলেও স্কোয়াডে আছেন খালেদ আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ। দুই পেসার নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজালেই দুই জনকেই দেখা যাবে একাদশে। মিরপুরে খেলা সর্বশেষ দুই টেস্টে অবশ্য তিন স্পিনারের সঙ্গে দুই পেসারকে নিয়েই একাদশ সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। দুই পেসারের সঙ্গে তিন স্পিনারকে বোলিং আক্রমণে দেখা যেতে পারে।
সেক্ষেত্রে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। এছাড়া ইয়াসির আলীকে বিশ্রাম দিয়ে দীর্ঘসময় ফর্মের বাইরে থাকা মোমিনুল হককে দেখা যেতে পারে স্কোয়াডে। শেষ মুহূর্তে কিপিংয়ের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে সোহানকে। সেক্ষেত্রে লিটন উইকেটের পেছনে দায়িত্ব সামলাবেন। সোহানকে বিশ্রাম দিলে ওখানে একজন বাড়তি বোলার কিংবা বাড়তি ব্যাটারকে দেখা যাবে। এদিকে ভারতীয় শিবিরে ফের ইনজুরি হানা দিয়েছে।
রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া লোকেশ রাহুল এবার চোটে পড়েছেন। বুধবার নেটে ব্যাটিং করতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েন তিনি। তবে এখনও নিশ্চিত নন রাহুলকে ছাড়াই মাঠে নামবে কিনা ভারত। শেষ পর্যন্ত রাহুল খেলতে না পারলে অধিনায়কের দায়িত্ব সামলাতে হতে পারে সহ-অধিনায়ক চেতেশ্বর পূজারাকে। পাশাপাশি ভারত ‘এ’ দলের হয়ে দারুণ পারফর্ম করা ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরনেরও হয়ে যেতে পারে টেস্ট অভিষেক।