মিয়ানমারে কারাভোগ শেষে ফিরেছেন ৮৫ বাংলাদেশি। তাদের নিয়ে আসা জাহাজে ফেরত গেছেন প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২৩ বিজিপি ও সেনা সদস্য। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সোয়া ১টা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে তাদের হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, তিন দফায় অনুষ্ঠিত প্রত্যাবসন প্রক্রিয়ার মতোই এবারও ৮৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে আসা এবং মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি ১২৩ বিজিপি ও সেনা সদস্যকে নিয়ে স্বদেশে ফেরত গেছেন। পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. রাহাত বিন কুতুব।
প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত শনিবার সকালে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর ‘ইউএমএস চিন ডুইন’ নামের জাহাজটি ৮৫ বাংলাদেশিকে নিয়ে রওনা দিয়ে গভীর সাগরের বাংলাদেশ সীমানায় অবস্থান নেয়। গতকাল রোববার সকালে তাদের বাংলাদেশি একটি জাহাজে হস্তান্তর করা হয়। পরে সকাল সোয়া ৯টায় জাহাজটি কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে পৌঁছে। এদিকে সকাল সাড়ে ৮টায় টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায় বিজিবির হেফাজতে থাকা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর ১২৩ সদস্যকে বাসে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে আনা হয়। পরে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা তাদের হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। এরপর বেলা সাড়ে ১২টায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা জাহাজটি করে মিয়ানমারের ১২৩ জন বিজিবি ও সেনা সদস্যকে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর বেলা সোয়া ১টার দিকে যাচাই–বাছাই শেষে ৮৫ বাংলাদেশি নাগরিককে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, প্রত্যাগত ৮৫ বাংলাদেশির মধ্যে ২৬ জন মিয়ানমারের মলামাইন কারাগারে, ১৬ জন পাথেইন কারাগারে, ৩ জন চকমারউ কারাগারে এবং বাকিরা রাখাইনের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন।
ইয়াঙ্গুনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সিতওয়েস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের অব্যাহত প্রচেষ্টায় তাদের দেশে পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়েছে। এবারে প্রত্যাবর্তনকারীরা কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী ও ঢাকা জেলার বাসিন্দা।
এ নিয়ে গত ১৫ মাসে মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সর্বমোট ৩৩২ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে ফেরত পাঠাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। এর আগে গত ৯ জুন ৪৫ বাংলাদেশি কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেন, সেদিন মিয়ানমার ফেরত যান ১৩৪ বিজিপি ও সেনা সদস্য। ২৫ এপ্রিল ফিরেছিলেন ১৭৩ বাংলাদেশি, একই সঙ্গে ওইদিন বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ জন বিজিপি ও সেনা সদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। এরও আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ৩৩০ জন বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে স্বদেশে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ।