দেশের চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মিয়ানমার থেকে সরকারের আমদানিকৃত ১ লক্ষ ৫ হাজার টন আতপ চাল আসা শুরু হচ্ছে। আগামী ১২ জানুয়ারি প্রথম জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। প্রথম জাহাজের পরই কয়েকদিনের ব্যবধানে মোট ১০টি জাহাজে ১ লাখ ৫ হাজার টন আতপ চাল চট্টগ্রামে পৌঁছাবে।
সূত্র জানায়, দেশে চাল ও গমসহ প্রচুর পরিমাণ খাদ্যশস্যের মজুদ থাকলেও বাজারে অস্থিতিশীলতা রয়েছে। চালের বাজার নিয়ে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট এবং ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। চালের কোনো সংকট না থাকলেও নানা অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে দাম। গতকালের হিসাব অনুযায়ী সরকারের গুদামে ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬২ টন চাল, ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৩১ টন গম এবং ৭ হাজার ৫২৫ টন ধান মিলে সর্বমোট ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৮৯৪ টন খাদ্য শস্যের মজুদ রয়েছে। এর বাইরে ধান–চালের মকাম, দোকান, মানুষের বাসাবাড়িতে প্রচুর পরিমাণ চালের মজুদ রয়েছে। খাদ্যশস্য মজুদ পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক এবং তা দেশের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট বলে উল্লেখ করে খাদ্য বিভাগের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বলেন, মজুদ পর্যাপ্ত হলেও রহস্যজনক কারণে চালের বাজার পরিস্থিতি কিছুটা অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৮০ হাজার টন চালের চাহিদা রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ চাল দেশে উৎপাদিত হয়। খাদ্যে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে উল্লেখ করে তারা বলেন, তবু বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে সরকার বাড়তি ধান চাল গুদামে মজুদ রাখে। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো খাদ্যশস্য সরকারের কাছে সুরক্ষিত রয়েছে বলেও কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন।
খাদ্য বিভাগ জানায়, সরকার ৫ লাখ টনের মতো চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন ( প্লাস মাইনাস ৫ পারসেন্ট) সিদ্ধ চাল আসতে শুরু করেছে। ভারতীয় চালের প্রথম চালান ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়ে গুদামে পৌঁছে গেছে।
এবার আসতে শুরু করেছে মিয়ানমারের আতপ চাল। মিয়ানমার থেকে কেনা ১ লাখ ৫ হাজার টন চালের মধ্যে ৯০ হাজার টন চাল আসবে ৪টি মাঝারী আকৃতির জাহাজে। বাকি ১৫ হাজার টন চাল আসবে ৬টি ছোট গিয়ারলেস ভ্যাসেলে। ওই ৬টির মধ্যে এমভি এমসিএল–১৯ জাহাজটি আগামী ১২ জানুয়ারি ২ হাজার ৫০০ টন চাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এর দুইদিন পর আগামী ১৪ জানুয়ারি এমভি গোল্ডেন স্টার নামের জাহাজটি ১২ হাজার টন চাল নিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছাবে।
সরকারের আমদানিকৃত পাঁচ লাখ টন চাল আসা শুরু হওয়ায় বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে উঠবে বলেও খাদ্য বিভাগ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।