ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার পর বজ্রঝড়ের কবলে পড়েছেন মিয়ানমারের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা। এতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি, দুর্যোগে যারা বসতবাড়ি হারিয়েছেন ও খোলা জায়গায় বসবাস করছেন, তাদের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। ভয়াবহ এই দুর্যোগে নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে। গত রোববার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বজ্রঝড় ও বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে আরও বলা হয়, দমকা বাতাস, বজ্রপাত, ভূমিধস ও ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে অসময়ের বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ কারণে লোকজনকে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে দিনের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
মিয়ানমারে এশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ভূমিকম্পটি আঘাত হানে গত ২৮ মার্চ। ৭ দশমিক ৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে। এতে রাজধানী নেপিদোসহ ছয়টি অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রোববার মিয়ানমার সামরিক সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জো মিন তুন বলেন, এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে ভূমিকম্পে। আহত হয়েছেন ৫ হাজার ১২ জন। এছাড়া, এখনো ২১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
ভূমিকম্পের কারণে দেশটির বিভিন্ন এলাকা এখনো বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বহু সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মান্দালয়ে মিয়ানমার রেসকিউ ফেডারেশেনের এক কর্মকর্তা বলেন, শনি ও রোববার ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধার অভিযানে ব্যবহার হওয়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। এতে উদ্ধার কাজ অনেক কঠিন হয়ে পড়লেও একেবারে স্থগিত রাখা হয়নি।
মান্দালয়ে কাজ করা আরেক উদ্ধারকর্মী বলেন, বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসের কারণে কয়েকটি ভবন ভেঙে পড়েছে। এতে যারা আশ্রয়ের খোঁজে রয়েছেন, তাদের কষ্ট আরও বেড়েছে।
জান্তা সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ৫ হাজার ২২৩টি ভবন, ১ হাজার ৮২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ২ হাজার ৭৫২টি বৌদ্ধ মঠের আবাসিক ভবন, ৪ হাজার ৮১৭টি প্যাগোডা ও মন্দির, ১৬৭টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ১৬৯টি সেতু, ১৯৮টি বাঁধ এবং প্রধান মহাসড়কের ১৮৪টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।