মিয়ানমারের অস্ত্র ও সঙ্গিনীকে খুঁজছে পুলিশ

কক্সবাজারে সাবেক কাউন্সিলর টিপু হত্যা

| মঙ্গলবার , ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে খুলনার সাবেক কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গোলাম রব্বানী টিপু হত্যার পর চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো রহস্যের কিনারা করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিপুকে যে পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছে সেটি মিয়ানমারের তৈরি বলে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছেন তারা। ফলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রোহিঙ্গা সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

টিপু যে হোটেলে উঠেছিলেন, সেখানে তার সঙ্গে এক নারীও ছিলেন। ঘটনার পর থেকে তাকে আর খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। তবে তার সম্পর্কে নানা তথ্য পাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কে বা কারা হত্যা করেছে টিপুকে? কেন এই হত্যাকাণ্ড? কোথায় সফরসঙ্গী সেই নারী? ওই নারীকে কী হত্যাকাণ্ডের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল? হত্যাকারী নিখুঁতভাবে একটি গুলিতে কীভাবে কাজ সারলএমন অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন গতকাল বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাওয়া না গেলেও পুলিশ বেশ কয়েকটি ক্লু সামনে রেখে এগোচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।

৫৪ বছর বয়সী গোলাম রব্বানী টিপুকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হোটেল সিগালের সামনের ফুটপাতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আরেক সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালু, টিপুর বন্ধু মেজবাহ উদ্দিন ভুট্টো গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হলেও শুনানির দিন নির্ধারণ হয়নি।

আইনশৃক্সখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের ধারণা, ওই নারী সম্ভবত একজন ছাত্রী। তার সবশেষ অবস্থান ছিল কক্সবাজারের লিংক রোড। এ হত্যাকাণ্ডের ছায়া তদন্ত করছে র‌্যাব। কক্সবাজারের দায়িত্বে থাকা র‌্যাব১৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরাও অনেক কিছু শুনছি, বিষয়টি এখনো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আত্মগোপনে থাকা ওই নারীকে খুঁজছি আমরা। তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে হত্যার রহস্য অনেকটা হয়ত জানা যেত।

র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, যে গুলির খোসা উদ্ধার হয়েছে, সেটা নাইন এমএম পিস্তলের। যেহেতু পিস্তলটি মিয়ানমারের তৈরি বলে ধারণা করা হচ্ছে, তাই এ হত্যাকাণ্ডে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের প্রশিক্ষিত ভাড়াটে কাউকে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

হত্যার রহস্য উদঘাটিত না হলেও টিপুকে যে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা অনেকটা নিশ্চিত বলেই মনে করছেন র‌্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তারা। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন বলেন, টিপুর সফরসঙ্গী খুলনার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ হাসান ইফতেখার চালু এবং টিপুর ঘনিষ্ঠ কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার বাসিন্দা মেজবাহ হক ভুট্টোকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড শুনানির দিন ঠিক হয়নি।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া শেখ হাসান ইফতেখার চালু সাবেক কাউন্সিলর রাব্বানীর সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। কিন্তু অধিকতর তদন্তের জন্যই দুজনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন গোলাম রব্বানীর ভগ্নিপতি মো. ইউনুস আলী শেখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধলালখান বাজারে চলন্ত প্রাইভেটকারে আগুন