মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলঙ্কা হবে না ।। খালেদাকে এর বেশি দয়া দেখানো সম্ভব না

| বুধবার , ৩১ আগস্ট, ২০২২ at ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ

বিএনপির শাসনামলে বাংলাদেশে ‘শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি’ হয়েছিল মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার সেই অবস্থা থেকে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে গেছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের (উত্তর ও দক্ষিণ) আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এতটুকু বলি, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে লাভ নেই। কেউ শ্রীলঙ্কা বানাচ্ছে বাংলাদেশকে। একটা কথা মনে রাখবেন, বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে পারে না। অর্থনীতির গতিশীলতা বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের।
করোনাভাইরাস মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈশ্বিক সঙ্কটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি শুধু বলব, অপচয় রোধ করতে হবে, সবকিছুর ব্যবহার সীমিত করতে হবে, সঞ্চয় করতে হবে, সাশ্রয়ী হতে হবে। কারণ এই যুদ্ধ আমেরিকা এত তাড়াতাড়ি থামতে দেবে না। আমেরিকার নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই যুদ্ধ থামবে না। এটা হলো বাস্তবতা এবং এতে পৃথিবী আরও ভয়াবহ অবস্থায় পড়বে।
দেশের পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনারা দেখেছেন, সারা পৃথিবীজুড়ে কিছু লোক আছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানারকম অপকর্ম করে যাচ্ছে। এরা কারা? যারা এই দেশে বিভিন্ন অপরাধ করে দেশ থেকে ভেগেছে, হয় যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার আমরা করেছি, তাদেরই ছেলেপেলে, ১৫ আগস্টের খুনি, যাদের আমরা বিচার করেছি, তাদেরই আপনজন, আর কিছু অপরাধী, যারা এখান থেকে অপরাধ করে পালিয়ে যায়। নানা ধরনের অপপ্রচার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে করে বেড়াচ্ছে। এদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয়।
কিছু দেশ ‘মানবাধিকারের কথা শোনায়’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে আমি অনেক কথা শুনি। আমি এখন সরকারে আছি। মানবাধিকারের কথা শোনায় আমাদেরকে। মানবাধিকার নিয়ে আমাদেরকে তত্ত্ব জ্ঞান দেয়। এই রকম কত ধরনের কথা শুনি। কিন্তু আমার কাছে যখন এই কথা বলে বা দোষারোপ করে তারা কি একবারও ভেবে দেখে যে আমাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল যখন আমরা আপনজন হারিয়েছি? স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে কেঁদে বেড়িয়েছি।
তিনি বলেন, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে হত্যা করে, তাদের মুখ থেকে মানবতার কথা শুনতে হয়। তাদের মুখে আমরা মানবতার কথা শুনি। মানবাধিকারের কথা শুনি। ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৫-তে একটার পর একটা ঘটনা তারা ঘটাতে চেষ্টা করেছে। তারা এখনও করে যাচ্ছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়ার দাবি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর বেশি আর দয়া দেখানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। তিনি বলেন, আহ্লাদের আর শেষ নাই। পৃথিবীতে কোন দেশে আছে এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেলে ছিল। অন্তত আমি এইটুকু দয়া করেছি যে, বয়োবৃদ্ধ মানুষ, বয়স্ক লোক, হাঁটতে, চলতে, উঠতে, বসতে অসুবিধা, শুলে একজন না ধরলে উঠতে পারে না। জেলখানায় যখন এই অবস্থায় দেখেছি, বলেছি ঠিক আছে, যেহেতু আমার ক্ষমতা আছে সেই এঙিকিউটিভ পাওয়ার আছে, তার মাধ্যমে আমি তার বাসায় থাকার সুযোগটা করে দিয়েছি। এখন সেজেগুজে, মেকাপ নিয়ে একবারে ভুরু-টুরু এঁকে হাসপাতালে যায়। আর এদিকে তার ডাক্তাররা রিপোর্ট দেয় খুবই খারাপ অবস্থা। প্রাণ নাকি যায় যায়। তার লিভারও নাকি পচা শেষ। লিভার সাধারণত পচলে মানুষ কী বলে? সেটা আর আমি মুখ দিয়ে বলতে চাই না। কী খেলে তাড়াতাড়ি লিভার পচে সেটা মনে হয় সবাই জানেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅবৈধ বসতি সরিয়ে নিতে ২৪ ঘণ্টা সময়
পরবর্তী নিবন্ধটিএসপি সার ভেজালে চক্র