মিটারের ছবি তুলে পাঠালেই তৈরি হবে ওয়াসার বিল

ভুতুরে বা গড় বিল থেকে রক্ষা পাবে গ্রাহক ।। হালিশহরে পাইলট প্রকল্প চালু

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ভুতুড়ে বিল ও গড়বিল নিয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার গ্রাহকদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মাসের পর মাস এমনকি বছরের পর বছর গড়বিল এবং ভুতুড়ে বিল নিয়ে গ্রাহকদের তিক্ততা লেগেই আছে। গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ থেকে রেহাই দিতে এবার নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এই ক্ষেত্রে একজন গ্রাহক নিজের মিটারের রিডিং নিজে দেখে ছবি তুলে ওয়াসার কাছে পাঠালে রিডিং অনুয়ায়ী বিল হয়ে যাবে। সেই বিল গ্রাহকের মোবাইলে পাঠানোর পর গ্রাহক-ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা বিকাশ, নগদ অথবা রকেটের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারবেন।

ওয়াসার এমন নতুন উদ্যোগের ফলে গ্রাহকদের বছরের পর বছর ভুতুড়ে ও গড়বিলের অভিযোগ থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম আজাদীকে বলেন, নতুন এ নিয়মটি গত ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিকভাবে নগরীর হালিশহরের বি-ব্লক এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসাবে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। এটা আমাদের কমার্শিয়াল বিভাগ থেকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এটা বাস্তবায়ন হলে গ্রাহকদের আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।

একজন গ্রাহক নিজের মিটারের ছবি তুলে হোয়াটস অ্যাপ, ইমু, অথবা ই-মেইলের সহায়তায় রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে পাঠালেই তৈরি হয়ে যাবে বিল। বিলটি পরে গ্রাহকের মোবাইলে পাঠানোর পর গ্রাহক তা পরিশোধ করতে পারবেন। বিদেশেও একই সিস্টেমে পানি-বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করা হয়। গ্রাহক তার মিটারের রিডিংয়ের ছবি তুলে সিস্টেমে দেয়। সেখান থেকে রিডিং অনুযায়ী বিল হয়ে যায়। তারপর গ্রাহকের কার্ড থেকে বিল কেটে নেয়া হয়।

এমন উদ্যোগে সিস্টেম লস, ভুতুড়ে বিল, গড়বিল থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অনেক সময় মিটার রিডার গ্রাহকের বাসায় না গিয়ে মনগড়া টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেন। গড় বিল তৈরি করেন। বিশেষত এই সমস্যা নিরসনের জন্য বিলিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এটা যদি প্রাথমিক ভাবে সফল হয়-তাহলে ধাপে ধাপে সর্বত্র বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।

চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দিনকে-দিন অফিস ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণ আসছে। তবে এই নিজের বিল নিজেই করুন ব্যবস্থায় সরাসরি স্মার্ট মোবাইলের সঙ্গে যোগসূত্র আছে। আগামী এক বছর আমরা গ্রাহকের তোলা ছবি দিয়ে বিলিং পদ্ধতি জরিপ করব। আগামী এক বছর পর আমরা চেষ্টা করব গ্রাহকদের কাছে এই আধুনিকীকরণ ব্যবস্থাটি সহজলভ্য করার। এটা সফল হলে গ্রাহকদের অভিযোগ যেমন কমবে-তেমনি গ্রাহকরাও সফল হবেন।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ওই রাজস্ব কর্মকর্তা আরো বলেন, গত ডিসেম্বর মাসের এক ১ তারিখ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপে গ্রাহকদের পাঠানো ছবি দেখে মাসিক বিল তৈরি করা হচ্ছে। বিল তৈরি হওয়ার পর সেই ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকের হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে। গ্রাহক সরাসরি অথবা স্মার্ট মোবাইলের মাধ্যমে বিকাশ, নগদ অথবা রকেটের মাধ্যমে বিল পরিশোধ করছেন।

এই পদ্ধতির পাশাপাশি ডিজিটাল স্মার্ট মিটার বাসানোরও উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। বিদেশি একটি কোম্পানিকে ওয়ার্ক অর্ডারও দেয়া হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ৩ হাজার ডিজিটাল মিটার চান্দাগাঁও এলাকায় বসাবো। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধসৈকতে ডিম পাড়লো এক সামুদ্রিক কচ্ছপ