মাকে ভালোবাসেনি এমন মানুষ হয়তো সমস্ত পৃথিবীতে একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। জন্মের আগে থেকেই একটা শিশু সর্বপ্রথম তার মাকেই চিনে। মায়ের গর্ভের উষ্ণতায়, মায়ের রক্তের ধারায় সে একটু একটু করে বেড়ে ওঠে। তীব্র প্রসবের যন্ত্রণা সহ্য করে মা–ই মানবশিশুকে পৃথিবীতে ভূমিষ্ট করে। তারপর শুরু হয় পৃথিবীর আলো বাতাসে বেড়ে উঠার যুদ্ধ। এই যুদ্ধেও একজন মা তার সন্তানের ছায়া হয়ে সহযোদ্ধার ভূমিকা পালন করে। একটি শিশুর বোধবুদ্ধি হওয়ায় আগ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তার মায়ের কাছাকাছিই থাকে এবং মাকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে।
সময়ের ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর মতো মানবশিশুরাও বেড়ে উঠে। তবে তখন কেউ কেউই মাকে প্রকৃত অর্থে ভালোবাসে। কারণ, পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীর মতো মানবশিশুরা কেবল দেহে নয়, বোধবুদ্ধি ও বিবেকেও বড় হয়। তখন একেকজনের বোধ বিবেক একেক রকমের হয়ে থাকে। আবেগ অনুভূতিতেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। মায়ের নিঃস্বার্থ ত্যাগ তিতিক্ষা কেউ অনুভব করে তা আজীবন মনে রেখে নিজের মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকে এবং মাকে ভীষণ ভালোবাসে, কেউ আবার মায়ের ভালোবাসা ও নিঃস্বার্থ ত্যাগকে দায়িত্ব নামক শব্দে বন্দীত্বে আটকে রেখে জন্মদাত্রী মাকে চরমভাবে উপেক্ষা করে।
আমাদের সকলেরই একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন, ‘মায়ের বিকল্প শুধুই মা। পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে আপন আর কেউ–ই হয় না কিংবা হতেও পারে না’। ইসলামেও বলা হয়েছে ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত’। তাই আসুন, প্রতিটি দিন মায়ের জন্য সময় বের করে তাকে কিছুটা সময় দিয়ে নিজেকে ধন্য করি। নিষ্ঠা ও মমতার সাথে মায়ের দেখাশোনা করি। তাঁর ভালোলাগা ও মন্দলাগার খোঁজখবর নিয়ে তাঁকে আঁকড়ে ধরে থাকি। ছোটবেলায় মা যেমন জড়িয়ে ধরে বলতো, ‘তোমাকে খুব ভালোবাসি সোনামনি’, তেমনি বৃদ্ধ কিংবা মধ্যবয়সী মাকেও জড়িয়ে ধরে বলি, ‘তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি মা’। মায়েদের সন্তানের কাছে খুব বেশি চাহিদা থাকে না। একটু খোঁজ খবর ও সামান্য যত্নআত্তিতেই মায়েরা সন্তানের প্রতি স্নেহের মায়া উজার করে দেয়। তাঁদের মমতার ভাণ্ডার কখনোই ফুরায় না। কারণ, তাঁরা কেবল রক্ত মাংসে গড়া মানুষ কিংবা নারী নয়, তারা ‘মা’।