মা‘র মাহাত্ম্য আর অপার করুণার দৃষ্টান্ত অপরূপ রূপে পাওয়া যায়, যখন ভেবে দেখি, যে কথা বলতে পারে না, সে পর্যন্ত ‘মা’ শব্দটা উচ্চারণের মতো সৌভাগ্য লাভ করে।
আমার মা…শতরূপে অপরূপ। মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত যার কোনো অংশেই নেই কোনো ক্ষোভ বা অহংকার। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে স্বতন্ত্রমণ্ডিত ও অনন্য। জ্ঞানে–গুণে–শিক্ষায়–সান্নিধ্যে–সাহিত্যে–প্রজ্ঞায় মা কখনো সরস্বতী, কখনো লক্ষ্মী, কখনো অন্নপূর্ণা। যেখানে অন্যায় সেখানে তার পদচারণা কালী রূপে। সর্বোপরি দুর্গা।
আর সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, মা‘র কাছে কখনোই কোনোকিছু লুকানো যায় না। মা সবটাই কোনো ক্রমে জেনে যায়। আমাদের অগোচরে প্রতিনিয়ত ঘটে যায় অনেক কিছুই। খুব কম সময়ই আমরা তা বোধ করি। তবে মার সবসময় সবটাই জানা থাকে। ধ্যানে–জ্ঞানে–প্রার্থনায় অবিশ্বাস্য এক আধ্যাত্মিক শক্তি মা অর্জন করেছে; যা সর্বক্ষণ মা‘র অগোচরে ঘটে যাওয়া প্রতিটা বিষয় সম্পর্কে সঠিক সময়ে তাকে অবহিত করে। হয়তো প্রতিটা মা–ই এমন ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়। তবে আমার মা‘র সাথে পার্থক্যটা হলো, মা সবসময় মুখে রাখে একটা অমায়িক হাসি; যেটা সর্বজনীন। মা‘র অগোচরে যে বা যারা যাই করে থাক না কেন, সব জানা সত্ত্বেও মা তাদের ক্ষমা–ই করেছে। আর ভালোবাসা দিয়ে কাছে টেনে নিয়েছে। আমার মা….আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। যার হৃদয় কিংবা অন্তরাত্মা সম্পূর্ণ পবিত্র আর পুণ্যে পূর্ণ। তাও দৃষ্টিকোণের সাপেক্ষে অনেকের অনেক কিছুই মনে হতে পারে, তবে যে যাই বলুক, আমার দৃষ্টিতে, আমার বিশ্বাসে আমার মা…‘আমার দুর্গা, ত্রিশূল ধরেছে স্বর্গে এবং মর্ত্যে / আমার দুর্গা বাঁচতে শিখেছে নিজেই নিজের শর্তে।’