মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | সোমবার , ১ এপ্রিল, ২০২৪ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজানের রোজা বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সবকিছু আয়নার মতো পরিষ্কার করার উপায়। রিপুকে ধ্বংস করে হিংস্র স্বভাবকে নিজ আয়ত্বে রাখার বিধান। মানব জাতির সামাজিক জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলার পন্থ্থা রোজার মধ্যে লুক্বায়িত রয়েছে।

উর্দু ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি ও সাহিত্যিক আল্লামা ইকবাল মাহে রমজানের রোজা সম্পর্কে বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে রোজা পালন করলে যে উপকার সাধিত হয়, তা একাধারে এক মাস না রেখে মাঝে মাঝে রাখলে অথবা রমজানে না রেখে বছরের যেকোনো মাসে রাখলেও তা সাধিত হতে পারে। আমরা তাই সঠিক বলে মনে করতাম, যদি কেবল মাত্র কোনো ব্যক্তি বিশেষের আত্মাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার উদ্দেশ্য থাকত রোজার। কোনো ব্যক্তি বিশেষকে নয়, বরং একটি জাতিকে সুসংহত ও সুষ্ঠু পথে পরিচালিত করার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন একাধারে রমজানের পুরো রোজা ফরজ করেছেন।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজা মানুষের জন্য ঢাল স্বরূপ। অন্যায়, অসুন্দর, পাপ কাজ থেকে আত্মরক্ষার জন্য, দোজখের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভের জন্য রোজা ঢাল স্বরূপ। ঢাল দ্বারা মানুষ যেভাবে আত্মরক্ষা করে তেমনি রোজা দ্বারা শয়তানের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করা যায়।

প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, যতক্ষণ না সেই ঢালকে ধংস করে। অন্য এক হাদিসে বর্ণনা আছে, প্রিয় নবীর নিকট সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম! রোজা কীভাবে বিনষ্ট হয়? তিনি ইরশাদ করেন, মিথ্যা ও পরনিন্দা দ্বারা রোজার ঢাল নষ্ট হয় এবং রোজার মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়। অতএব রোজাদারকে মিথ্যা ও পরনিন্দা প্রভৃতি পাপ কর্ম থেকে দূরে থাকতে হবে।

এক রেওয়াতে বর্ণনা আছে, কিয়ামতের দিন জালিমের নেকি মজলুম নিয়ে যাবে। কিন্তু রোজার নেকির কথা অন্যরা জানতে পারবে না। আমাদের দ্বারা অন্যের হক নষ্ট করার তো কোনো সীমা নেই। যখন কিয়ামতের দিন আমাদের সকল নেকি অন্যরা নিয়ে যাবে, তখন এই রোজাই জাহান্নামের আগুন থেকে ঢালের ন্যায় রক্ষা করবে। এই নেকিই নিজের থাকবে। আলহামদুলিল্লাহ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঈদের ছুটি একদিন বাড়ানোর সুপারিশ
পরবর্তী নিবন্ধওরা সরকারি জায়গা ইজারা দেয়, দোকান থেকেও টাকা নেয়