পবিত্র মাহে রমজানুল মোবারকে প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বন্দীদেরকে মুক্তি দিতেন এবং সকল প্রার্থীদের মনের আশা পূর্ণ করতেন। এ মাসে যদি কেউ নেক আমল করার সুযোগ লাভ করে সে সারা বছরেই নেককাজ করার সুযোগ পাবে।
এ মাস কারো অশান্তিতে অতিবাহিত হলে সারা বছরই তার অশান্তিতে কাটবে। অতএব যথাসাধ্য প্রফুল্ল চিত্তে শান্তিপূর্ণভাবে এ মাস অতিবাহিত করা উচিৎ। এ মহান মাসে প্রতিরাতে অগণিত দোজখবাসীদেরকে দোজখের অগ্নি থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এমাসে বেহেস্তের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয় এবং দোজখের দরজা গুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় শয়তানকে। আর উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রহমতের সকল তোরণ।
বিখ্যাত হাদিস গ্রন্থ বোখারী শরীফে বর্ণনা আছে, আদম সন্তানের প্রতিটি নেক আমল দশগুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেছেন, রোজা শুধু আমার জন্য আমি নিজে তার বিনিময় দান করবো। আমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সে পানাহার ছেড়েছে। প্রবৃত্তির আকাঙ্ক্ষা পরিত্যাগ করেছে। রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের সময় আছে। একটি ইফতারের সময় আর একটি প্রভু প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের সময়। রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহতা’লার কাছে মিশকে আম্বরের চেয়েও বেশি পছন্দনীয়। (আল হাদীস)। প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন, বেহেস্তের একটি দরজার নাম ‘রায়হান’। (রায়হান শব্দের অর্থ তৃষ্ণা নিবারক ও তৃপ্তিদায়ক) ঐ দরজা শুধু রোজাদারের জন্যই। অন্য কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ পাবে না। আর এই দরজা দিয়ে যে প্রবেশ করবে সে কোনোদিন পিপাসিত হবেনা। (সহীহ বোখারী ও মুসলিম)।
মুসলমানের উপর রোজা ফরজের কারণ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক বলেছেন, লায়াল্লাকুম তাত্তা কুন অর্থাৎ যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। এতে বুঝা যায় যে, তাকওয়া বা পরহেজগারীর শক্তি অর্জন করার ব্যাপারে রোজার একটা বিশেষ ভূমিকা বিদ্যমান। কেননা, রোজার মাধ্যমে প্রবৃত্তির তাড়না নিয়ন্ত্রণ দ্বারা বিশেষ শক্তি অর্জিত হয়। প্রকৃত প্রস্তাবে সেটাই তাকওয়া বা পরহেজগারীর ভিত্তি।












